English

28 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

কঠোর ব্যবস্থা নিন: বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিং-বুলিং

- Advertisements -

সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ঘটনা র‌্যাগিং-বুলিংয়ের বিষয়টিকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের নামে এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অনেকের ধারণাই বদলে যেতে পারে।

যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা সবাই এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। গত এক-দেড় মাসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় ১০টি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। এমনকি দুই শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। একজন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পড়বেনই না—এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

একজন নবাগত শিক্ষার্থী ও তাঁর পরিবার যখন আগের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পান, তখন ওই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে অনেকেরই শ্রদ্ধাবোধ উঠে যেতে পারে। র‌্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনকারী শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং দিয়ে প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের নাকি তথাকথিত ‘ম্যানার’ শেখানো হয়। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ‘গেস্টরুম সংস্কৃতি’ বলে নতুন এক সংস্কৃতি চালু হয়েছে। হলের নতুন আবাসিক ছাত্রদের অতিথি কক্ষে ডেকে এনে ম্যানার শেখানো হয়। অর্থাৎ হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের ধারণা, নতুনরা কেউ ম্যানার জানেন না। অভিযোগ রয়েছে, এই গেস্টরুম সংস্কৃতির নিয়ন্ত্রক নাকি ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন।

একজন নবীন শিক্ষার্থী যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে পা রাখেন, তখন তাঁর চোখে থাকে অন্য এক স্বপ্ন। কিন্তু আবাসিক হলের গণরুম তাঁর জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেয়। নিজের ও পরিবারের স্বপ্ন পূরণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পা রাখা অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ হয়।প্রশ্ন উঠতে পারে, যাঁরা র‌্যাগিং দিচ্ছেন, তাঁরা কি এজাতীয় পারিবারিক পরিবেশ থেকে উঠে আসা, সেই পরিবেশটি কি এ ধরনের নোংরা ও দূষিত? নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে বা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসে যে রাজনীতির সঙ্গে তাঁরা জড়িত হচ্ছেন, সেই রাজনীতিই তাঁদের এই পথে নিয়ে যাচ্ছে?

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি বলেছেন, আজ তাঁরা অ্যান্টি-র‌্যাগিং ক্যাম্পেইন শুরু করছেন। এটাকে তাঁরা বলছেন শুদ্ধি অভিযান। ছাত্রলীগ লিফলেট বিলি করবে, সমাবেশ করবে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবে।

অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র‌্যাগিং প্রতিরোধ নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং-র‌্যাগিং প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’-এর খসড়াটিতে মৌখিক, শারীরিক, সামাজিক, সাইবার ও সেক্সুয়াল বুলিং-র‌্যাগিংয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এমন আচরণের জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং গভর্নিং বডির সদস্যদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। খসড়া নীতিমালা অনুসারে বুলিং-র‌্যাগিংয়ের মাত্রা অনুযায়ী দায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে।

র‌্যাগিং একটি সামাজিক ব্যাধি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই নতুন ব্যাধিতে আক্রান্ত। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নানা রকম নির্মম র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনোটিরই ন্যায্য প্রতিবাদ কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ঘটনা ঘটেনি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। র‌্যাগিং-বুলিং বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/sj0e
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন