শুক্রবার ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রাজধানীতেও ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল। এমন অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টি দুয়েক দিন একটু কম থাকলেও আগামী শুক্রবার থেকে পুনরায় বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ভারি বৃষ্টি ছাড়াও বাংলাদেশে বন্যার একটি বড় কারণ উজানের ঢল। প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়, ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের একটি বড় অংশই এখন ভয়াবহ বন্যাকবলিত। বন্যায় গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সেখানে ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
সেই পানি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েই বঙ্গোপসাগরে যাবে। সেই সঙ্গে ভারি বর্ষণ যুক্ত হলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবেই।
বৈরী পরিবেশ বা দুর্যোগ মোকাবেলা করার ক্ষমতা সবার সমান হয় না। বাংলাদেশের বন্যাপ্রবণ এলাকার বেশির ভাগ মানুষ অতিদরিদ্র। তাদের সহন ক্ষমতাও অনেক কম। চার দফা, পাঁচ দফা কিংবা লাগাতার বন্যায় তাদের অস্তিত্বই আজ প্রায় বিপন্ন অবস্থায় চলে এসেছে। তাদের রক্ষায় জরুরি ও ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, একমুঠো চাল নেই, রান্না করার মতো অবস্থাও নেই, বিশুদ্ধ পানি বা খাওয়ার পানির অভাবও তীব্র—তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। দীর্ঘ বন্যা বা জলাবদ্ধতার কারণে পানিবাহিত রোগব্যাধি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। জটিল রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে চুরি-ডাকাতি অনেক বেড়ে গেছে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় চুরি অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে হাওর এলাকায় গবাদি পশু চুরি হচ্ছে বেশি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বেশি। তাই এসব এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আরো বেশি উদ্যোগ নিতে হবে।
বন্যার পানি কিছুটা কমার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়ক্ষতির যে চিত্র উঠে আসছে, তা রীতিমতো ভয়াবহ। জমির ফসল, পুকুরের মাছ, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শত শত কিলোমিটার সড়ক ও বহু ব্রিজ-কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় নদীভাঙনে শত শত পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে। তাই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি বন্যার স্থায়ী সমাধানের ক্ষেত্রে আরো জোর দিতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/mg1t