জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকার সব ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেওয়ার একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই লক্ষ্যে সরকার তিনটি কর্মসূচির আওতায় দেশের ভূমিহীন-ঠিকানাহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কাজ করছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২।
এ ছাড়া আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পও রয়েছে। তবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা যৌথভাবে গৃহহীনদের জন্য নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে সরকারের ৮০ জন সিনিয়র সচিব বা সচিব নিজ নিজ এলাকায় নিজস্ব অর্থায়নে ১৬০টি ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন।
গত শনিবার সকালে ‘মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষকে সরকারের সচিবগণের গৃহ উপহার’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে দেশের বিত্তবানদের সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই দেশ থেকে চিরতরে দারিদ্র্য দূর করতে পারে। যে যে স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং যে গ্রামে জন্মেছেন তার উন্নয়নে সহযোগিতা করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বিত্তশালীদের নিজ নিজ এলাকায় দুস্থদের দিকে তাকানোর আহ্বান জানিয়ে গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার মানবিক আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে গৃহহীন মানুষকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়ার যে মহৎ উদ্যোগ সিনিয়র সচিব ও সচিবরা নিয়েছেন, তা অবশ্যই ধন্যবাদার্হ। সরকারের অনেক মহৎ উদ্যোগের পাশাপাশি দেশের বিত্তবান মানুষ ও বড় বড় প্রতিষ্ঠান ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য এভাবে কাজ করলে দেশের কোনো মানুষই যে গৃহহীন থাকবে না, তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। কিন্তু আমরা দেখতে পাই মাঠপর্যায়ে সরকারের অনেক মহৎ উদ্যোগের সুবিধা সত্যিকারের সুবিধাবঞ্চিতদের কাছে পৌঁছে না।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পরিচয় গোপন করে গৃহহীন হিসেবে সরকারি বরাদ্দের ঘর পেয়েছেন পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্যের স্বজনরা। সরকার যখন গৃহহীনদের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে চাইছে, মুজিববর্ষে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না এমন উদ্যোগ নিয়েছে, তখন একজন সংসদ সদস্য কী করে স্বজনদের সরকারি বরাদ্দের ঘর উপহার দেন? এই স্বজনদের কেউই গৃহহীন বা ভূমিহীন নন।
আমাদের জনপ্রতিনিধিদের অন্তত সরকারের মহৎ উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। সরকারের মানবিক উদ্যোগগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে এই দেশ একদিন অবশ্যই বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াবে। আসুন, সবাই মানবিক হই।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন