English

26.4 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ৯, ২০২৫
- Advertisement -

চিকিৎসার খরচ কমান: রোগের কারণে দারিদ্র্য বাড়ছে

- Advertisements -

সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। চলতি বছরের প্রথম দিকে লন্ডনভিত্তিক ইকোনমিস্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ইকোনমিস্ট ইমপ্যাক্ট’-এর জরিপে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতের নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা, আন্তরিকতার অভাব, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভুল চিকিৎসা—এমনই অনেক দুর্বলতার চিত্র পাওয়া যায়। জরিপ অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) ছয়টি অঞ্চলের ৪০টি দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্য সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্নে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে ৩.৭ শতাংশ মানুষ।

অর্থাৎ প্রায় ৬১ লাখ ৩০ হাজার মানুষ দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। ফলে মোট দারিদ্র্যের হারও বাড়ছে, বর্তমানে তা ২২ শতাংশের ওপরে। দেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অনেক কম। মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বিবেচনায় এখানে বরাদ্দ দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন।
এ কারণে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। স্বাস্থ্যসেবার ৭৩ শতাংশ ব্যয় মানুষের পকেট থেকে মেটাতে হয়। এই ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি পরিবারের একজন সদস্য হাসপাতালে ভর্তি হলে গড়ে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়।

এর প্রায় ৫৪ শতাংশ ওষুধে ব্যয় হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রেও মোট ব্যয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ ওষুধের পেছনে চলে যায়। এসব ব্যয় মেটাতে গিয়ে আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়তে হয়। ফলে ঋণ করে খরচ বহন করতে হয় ২৬ শতাংশ মানুষকে।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা যে খুবই কম, সে কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

সেই সঙ্গে আছে ব্যবস্থাপনাগত সমস্যা। ইউনিয়নভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হলেও সেগুলোর অবস্থা ভালো নয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোও প্রত্যাশিত সেবা দিতে পারছে না। বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে রোগীদের দীর্ঘ সিরিয়ালে অপেক্ষমাণ থাকতে হয়।

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক দেখানো গেলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হয় বাইরে থেকে। সরকারি বরাদ্দের ওষুধ রোগীরা ঠিকমতো পায় না। ফলে রোগীদের চিকিৎসা খরচ অনেক বেড়ে যায়, যা অনেক রোগী বহন করতে পারে না।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলোর অন্যতম ছিল মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য ও মানসম্মত করা। কিন্তু সেই অঙ্গীকার পূরণ থেকে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি। ২০১২ সালে সরকারের কৌশলপত্রে বলা হয়েছিল ক্রমান্বয়ে ব্যক্তির নিজস্ব চিকিৎসা ব্যয় কমিয়ে আনা হবে। বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। ২০১২ সালে যেখানে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬৪ শতাংশ, বর্তমানে তা ৭৩ শতাংশ। আমরা চাই, ব্যক্তির নিজস্ব চিকিৎসা ব্যয় কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/qfa9
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন