দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। বাড়ছে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা। একইভাবে বাড়ছে নৃশংস কায়দায় হত্যার ঘটনাও। এমন বেশ কয়েকটি খবর প্রকাশ করা হয়েছে। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে রবিবার রাতে কালাম মিয়া (৩৮) নামের এক যুবককে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে, মুখে টেপ আটকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনী বিরোধের জেরে গত সোমবার রাতে প্রতিপক্ষের বোমা হামলায় মনির চৌকিদার (৩০) নামের এক মুদি দোকানি নিহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় মেরাজুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরো একজন। ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে সোমবার সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের ছুুরিকাঘাতে মাসুম মিয়া (১৭) নামের এক কিশোর খুন হয়েছে। সোমবার দুপুরে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে চাচার লাঠির আঘাতে সুজন সরদার (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগর এলাকায় রবিবার রাতে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রীকে কুপিয়ে তাঁর মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
প্রতিদিনই গণমাধ্যমে এমন অনেক খবর প্রকাশিত হয়। অনেক ঘটনা আড়ালেও থেকে যায়। খুনাখুনির এসব ঘটনা ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলাজনিত নানাবিধ সমস্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়, বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম করে ঈদের সেলামি চাওয়া হচ্ছে। না দিলে পরিণতি কী হবে—সেই হুমকিও দেওয়া হচ্ছে একই সঙ্গে।
মাদক সমস্যা, কিশোরদল, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন চুরি-ছিনতাই, প্রতারণাসহ আরো নানা ধরনের অপরাধ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পার্বত্য এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিনের সন্ত্রাসী তৎপরতা ক্রমেই স্থানীয়দের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে। তাদের হাতে ১৬ দিন আটক থাকার পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন সাবেক সেনাসদস্য মো. আনোয়ারুল হক। সোমবার ভোরে তিনি কিশোরগঞ্জ শহরে নিজ বাসায় ফেরেন।
সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সারা দিন কাজকর্ম করে সন্ধ্যার পর মানুষ পরিবার-পরিজনের জন্য কেনাকাটা করবে, বিভিন্ন মার্কেটে যাবে। কিন্তু ছিনতাই যেভাবে বাড়ছে, তাতে অনেকেই শঙ্কিত। লাখ লাখ মানুষ ঈদ করতে গ্রামে যাবে। তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, জাল টাকার ব্যবসায়ীদের তৎপরতাও বাড়বে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোকে আরো তৎপর হতে হবে।