১৯৬২ সালে জাপানের কাশিমা বন্দর তৈরির কাজ শুরু হয়। তখন সেখানে ছিল ধানক্ষেত। আজ তা হয়ে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। বিখ্যাত সেই কাশিমা বন্দরের আদলে কুতুবদিয়ার মাতারবাড়ীতে গড়ে উঠছে বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর। দ্রুত এগিয়ে চলেছে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি মাতারবাড়ী প্রকল্প সম্পর্কে যথেষ্ট আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এটা অনেক বড় প্রকল্প হতে যাচ্ছে। বাস্তবায়নের পর মাতারবাড়ী হবে দ্বিতীয় সিঙ্গাপুর।
বুধবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পটি আসিয়ান অঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার যোগাযোগে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করছে মাতারবাড়ী উন্নয়ন প্রকল্প। দুই ধাপে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের মধ্যে। কাজ শেষ হলে এই বন্দরে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে। সাধারণত ১৪ মিটার গভীরতার জাহাজ যে বন্দরে ভিড়তে পারে, সেটাকেই গভীর সমুদ্রবন্দর বলা হয়। উচ্ছ্বসিত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ২০২৫ সালে নতুন এক বাংলাদেশ পাবে বিশ্ব। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বদলে যাবে বাংলাদেশের চেহারা।
থার্ড টার্মিনাল, মাতারবাড়ী প্রকল্প, মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন স্থান করে নেবে। তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ অনেক বেড়েছে। তিন শতাধিক জাপানি কম্পানি এখন বাংলাদেশে কাজ করছে। মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দরের পাশাপাশি গড়ে উঠছে বিদ্যুৎ হাব। থাকছে এলএনজি টার্মিনাল। বন্দর, বিদ্যুৎ ও এলএনজি সুবিধা থাকায় এখানে গড়ে উঠবে একটি শিল্প হাব। গড়ে তোলা হবে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিং মলসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধাও। সব মিলিয়ে মাতারবাড়ী হয়ে উঠেছে অফুরন্ত সম্ভাবনার এক কেন্দ্র। তাই জাপানি রাষ্ট্রদূতের কথায় আমরা কোনো অতিরঞ্জন দেখছি না।
জাপান যে প্রকৃত অর্থেই বাংলাদেশের বন্ধু এবং বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন সহযোগী তার প্রমাণ মাতারবাড়ী, মেট্রো রেলসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া কোনো দেশের স্বাধীনতাই অর্থবহ হয় না। বাংলাদেশ এখন সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। বিজয়ের মাসে বাংলাদেশকে নিয়ে এমন আশাবাদের জন্য জাপানের রাষ্ট্রদূতকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/bsp3
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন