English

16 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
- Advertisement -

মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নিন: উচ্চশিক্ষা নিম্নমুখী

- Advertisements -
দেশের শিক্ষার মান, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার মান তলানিতে নেমেছে। একসময় ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ বলা হতো যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে, এখন আন্তর্জাতিক র্যাংকিং বা মানবিচারে বিশ্বের সেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও তার নাম নেই। একই অবস্থা চিকিৎসা শিক্ষার ক্ষেত্রেও। একসময় প্রচুর বিদেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মেডিক্যাল কলেজগুলোতে পড়তে আসতেন, এখন সেই সংখ্যা অতি নগণ্য।
অথচ দেশে প্রায় প্রতিবছরই বেড়েছে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ। আর বেড়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে দলীয়করণ। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ ভালো অবকাঠামো ও নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠেছে। অথচ এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদেশি শিক্ষার্থী বাড়ার বদলে ক্রমাগতভাবে কমছে।

এতে শিক্ষা খাতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের যে সুযোগ ছিল, তা দিন দিন কমছে।

একসময় প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে বিদেশি ছাত্রদের জন্য আলাদা ছাত্রাবাস ছিল। এখন সেসব দখল করে আছেন দেশীয় শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ‘স্যার পি জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হল’।

এখন সেখানে যৎসামান্য বিদেশি শিক্ষার্থীর পাশাপাশি তরুণ শিক্ষকরা থাকেন। ঢাকা কলেজেও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস করা হয়েছিল। এখন সেই ছাত্রাবাসে দেশীয় শিক্ষার্থীরাই থাকেন। একসময় ভারতের কাশ্মীর, নেপাল ও ভুটানের শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দ ছিল বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজগুলো। এখন আর সেই অবস্থা নেই।

ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২২ সালে ২৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৭০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী পড়তেন। এর মধ্যে ছাত্র ৫০৪ জন এবং ছাত্রী ১৬৬ জন। ২০২১ সালে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন ৬৭৭ জন। ২০২০ সালে ছিলেন ৭৬৭ জন। অর্থাৎ প্রতিনিয়ত কমছে। ২০২২ সালে দেশে ১০০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন এক হাজার ২৮৭ জন। আগের বছর ২০২১ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ছিলেন এক হাজার ৬০৪ জন। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ৩১৭ জন। এভাবে ক্রমাগত বিদেশি শিক্ষার্থী কমার পেছনে তিনটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো হলো—ক. দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ও মানের ঘাটতি। খ. যেসব দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসতেন, সেসব দেশ উচ্চশিক্ষায় অনেক বেশি উন্নতি করেছে। গ. বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিক্যাল এডুকেশনের স্বীকৃতি না পাওয়া। ফলে বাংলাদেশের ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। তাই বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন।

আমাদের উচ্চশিক্ষার দুর্গতি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এ থেকে উচ্চশিক্ষাকে রক্ষা করতে হবে। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করবে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন