আছে উপজাতি জনজীবনের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি। এসবই সারা দুনিয়ার পর্যটনশিল্পের প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগের অভাবে আমরা পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে পারছি না।
অনেক দেশ আছে, যাদের প্রধান আয় হচ্ছে পর্যটনশিল্প।
এত সুন্দর সৈকত থাকা সত্ত্বেও এখানে বিদেশি পর্যটকদের আগমন খুব কমই হয়। এর একটি বড় কারণ উপভোগ করার মতো সুযোগ-সুবিধার অভাব। সেই সঙ্গে আছে নিরাপত্তার অভাব, অপরিচ্ছন্নতা, হোটেল-মোটেলগুলোর মানসম্মত সেবার অভাব এবং উচ্চমূল্য। যাতায়াত বা চলাচলের সুযোগ-সুবিধার যেমন অভাব রয়েছে, তেমনি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ।
পর্যটন ব্যবসায় এগিয়ে থাকা দেশগুলোতে সৈকতে ভ্রমণকারীদের জন্য আরো অনেক সুযোগ-সুবিধার আয়োজন করতে দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে সিনেপ্লেক্স, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, থিম পার্ক, নাইট ক্লাব, ক্যাসিনো, ডাইভিং, সারফিং, ক্রুইজিন, প্রমোদতরি, সমুদ্রভ্রমণ, বিশেষায়িত শপিং মল, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন, বিদেশিদের জন্য আলাদা জোন, ক্রেডিট কার্ড ও মানি এক্সচেঞ্জের ব্যাপক সুবিধা। আমাদের কক্সবাজারে এসব সুবিধা প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টো আছে আমলাতান্ত্রিকতা। ফলে কক্সবাজার সৈকতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও রয়েছে অবিশ্বাস্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, কক্সবাজারে বিনিয়োগে রীতিমতো বিড়ম্বনা পোহাতে হয় বিনিয়োগকারীদের। এখানে বিনিয়োগ করতে চাইলে ছাড়পত্র নিতে হয় ১৬ থেকে ১৮টি সরকারি দপ্তর থেকে। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা জটিলতা। ফলে বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন না।
এই খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রয়োজন এবং তা বাস্তবায়নে চাই আন্তরিক উদ্যোগ। সৈকতভ্রমণের পাশাপাশি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, নদীভ্রমণ, ইকোট্যুরিজম বা প্রকৃতিভ্রমণ, সাংস্কৃতিক ভ্রমণ ইত্যাদি সুবিধা কাজে লাগাতে হবে। ভ্রমণকারীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি, পর্যটনশিল্পে উন্নত দেশগুলোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশীয় পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।