’ বিটিএমএ সভাপতি রূপকার্থে বললেও তাঁর মন্তব্যটি বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াবহতার চিত্রই তুলে ধরে।
সম্মেলনে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এলএফএমইএবি, বিসিআই ও আইসিসি-বাংলাদেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেছেন যে বিপুল পরিমাণ গ্যাস বিল পরিশোধ করার পরও পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে, ব্যাংকঋণের সুদ বেড়েছে এবং আইন-শৃঙ্খলার অবনতি শিল্প বন্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার একদিকে শিল্প চালাতে সহায়তা করছে না, অন্যদিকে সময় বেঁধে দিয়ে বেতন দিতে বলছে। সরকার নিজেই স্থানীয় কাগজকলগুলোকে গলা টিপে মেরে ফেলছে। চিনিকল থাকার পরও চিনি আমদানি করা হচ্ছে। সরকার একদিকে বিদেশি বিনিয়োগের আশা করছে, অন্যদিকে দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভিকটিম করছে।কিন্তু আমরা মনে করি, দেশীয় উদ্যোক্তারা ভালো না থাকলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ পাবেন না। সার্বিক পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়ছে, জনমনে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে।আশার কথা যে সরকার এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতির উদ্যোগ নিয়েছে। এই ইতিবাচক পদক্ষেপ এলএনজির দাম অন্তত ২০ শতাংশ কমিয়ে দেবে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প উৎপাদন এবং পরিবহন খাতে কিছুটা স্বস্তি আনবে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল।কিন্তু গত প্রায় ১০ মাসে সরকারের অর্থনৈতিক প্রবণতা শুধু ঋণমুখী। এই ঋণ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্বার্থের জালে জড়িয়ে যাচ্ছে দেশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, জিডিপির ৪০ শতাংশের বেশি ঋণনির্ভর হওয়া একটি দেশের অর্থনীতির জন্য খারাপ। বাংলাদেশের জিডিপির ৪৫ শতাংশ এখন ঋণনির্ভর। আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতিকে প্রকৃত অর্থে স্বাবলম্বী করতে হলে বেসরকারি খাতকে সম্পূর্ণ সমর্থন দেওয়া প্রয়োজন।আমরা মনে করি, দেশ ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বেসরকারি খাতকে আস্থায় নিতে হবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। এ জন্য বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের হয়রানি বন্ধ করা, তাঁদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার মতো পদক্ষেপগুলো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কোনো প্রকার হয়রানিই কাম্য নয়। এভাবে চলতে থাকলে শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে এবং দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হবে।