English

33.5 C
Dhaka
শুক্রবার, জুলাই ১৮, ২০২৫
- Advertisement -

কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে: ব্যাংকে বসেও মুদ্রাপাচার

- Advertisements -
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশে প্রধান প্রতিবন্ধক মুদ্রাপাচার। মুদ্রাপাচারের প্রধান উপায়গুলোর মধ্যে আছে ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং, হুন্ডি, বিনিময় ইত্যাদি। হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার জন্য প্রণোদনা প্রদানসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।কিন্তু ব্যাংকিং চ্যানেল কি ঠিকমতো কাজ করছে? প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, প্রবাসী কিংবা বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিরা সঙ্গে যেসব বিদেশি মুদ্রা নিয়ে আসেন বিমানবন্দরে থাকা ব্যাংকের শাখাগুলোতে তা দেশি মুদ্রায় নগদায়ন করেন।
কিন্তু এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী সেগুলো ব্যাংকে ক্রয় না দেখিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কিনে নেন। পরে সেসব মুদ্রাপাচারকারী, হুন্ডি ব্যবসায়ী, কালোবাজারি, দুর্নীতিবাজসহ অবৈধ লেনদেনকারীদের কাছে অধিক লাভে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমন একটি চক্রকে চিহ্নিত করে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ধারণা করা হয়, এই পদ্ধতিতে প্রতিদিন আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা রাষ্ট্রীয় রিজার্ভে না গিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক সচিব জানান, বিমানবন্দরে গত সোমবার দিনব্যাপী অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বৈদেশিক মুদ্রার কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে তারা স্বাক্ষরহীন, ভুয়া ভাউচার বা এনক্যাশমেন্ট স্লিপ দিয়ে বিদেশি মুদ্রা কিনে নিত। ক্রয়কারী ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জারগুলো তাদের মূল হিসাবে বা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত অ্যাকাউন্টে সেসব ক্রয় দেখাত না।

ফলে কেন্দ্রীয় রিজার্ভে এসব অর্থ যোগ হতো না।

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতি বা রিজার্ভের পরিমাণ অনেক কমে গেছে। নানা ধরনের সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার পরও মুদ্রাপাচার থামানো যাচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) ২০২১ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের ছয় বছরে দেশ থেকে বাংলাদেশি মুদ্রায় চার লাখ ৬১ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

অর্থাৎ বছরে পাচার হয়েছে গড়ে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। মুদ্রাপাচারের আগের জানা উপায়গুলোর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন উপায়।

মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করেও মুদ্রাপাচার হচ্ছে। ব্যাংকিং বা অনুমোদিত আর্থিক চ্যানেলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও যদি এভাবে বৈদেশিক মুদ্রার কালোবাজারিতে জড়িত হয়ে পড়ে তার ফলাফল কী হবে?

ডিজিটাল ব্যাংকিং বা পেমেন্টের অন্যান্য সুবিধাও মুদ্রাপাচারে কাজে লাগানো হচ্ছে। আছে অবৈধ অনলাইন গ্যাম্বলিং, গেমিং, বেটিং, ফরেক্স এবং ক্রিপ্টো ট্রেডিং ইত্যাদি। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ বাড়ছে।

মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই বাড়িঘর কেনা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় পানামা পেপারস, প্যারাডাইস পেপারস ও প্যান্ডোরা পেপারসেও অনেক অর্থপাচারকারী বাংলাদেশির নাম এসেছে।

টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে মুদ্রাপাচার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুদকের এ ধরনের অভিযান আরো বাড়াতে হবে। মুদ্রাপাচার রোধের দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য সংস্থাগুলোকেও আরো তৎপর হতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/8e9x
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন