English

28 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

কমছে না মুদ্রাপাচার: কঠোর পদক্ষেপ নিন

- Advertisements -

বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে মুদ্রাপাচার। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই ক্ষতিকর প্রবণতা। বর্তমান সময়ে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা থাকায় এই প্রবণতা আরো বেড়েছে। হুন্ডি, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন বুস্টিংয়ের নামে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছে এই অর্থ যাচ্ছে, বাংলাদেশে তাদের কোনো ব্যাবসায়িক ঠিকানা বা স্থানীয় কার্যালয় না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া যাচ্ছে না। প্রচলিত আইনেও তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ট্যাক্স বা রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকারও হারাচ্ছে বড় অঙ্কের রাজস্ব। শুধু তা-ই নয়, অনেক প্ল্যাটফর্মে দেশবিরোধী অপপ্রচার, গুজব ও বিদ্বেষ ছড়ানো হয়। যৌন হয়রানির মতো অপরাধও ঘটে অনেক প্ল্যাটফর্মে।

সারা পৃথিবীতেই বাড়ছে সাইবার অপরাধ। এসব অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব, বিগো, লাইকি, পাবজি, টিকটকের মতো অনেক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। ফলে যেসব দেশ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে খুব বেশি সোচ্চার সেসব দেশেও যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের কঠোর আইন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক, কানাডাসহ আরো অনেক দেশেই এমন আইন রয়েছে। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রাইভেসি নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত সরকার। তথ্যপাচার ঠেকানো এবং দেশীয় মাধ্যমের প্রসারে ফেসবুক, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে চীন।

২০১৯ সালে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স ফেসবুকসহ ইন্টারনেট জায়ান্টগুলোর ওপর ডিজিটাল সেবা করারোপ করে আইন পাস করে। জানা যায়, বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে কঠোর আইন প্রণয়নের কাজ এবং তা করতেই হবে। এরই মধ্যে আইন করে ফেসবুককে নিউজ কনটেন্টের মূল্য পরিশোধে বাধ্য করেছে অস্ট্রেলিয়া। একইভাবে ফেসবুককে মূল্য পরিশোধে বাধ্য করছে কানাডাও। তাহলে বাংলাদেশে কেন নয়? অর্থপাচার রোধে বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্থানীয় কার্যালয় স্থাপনে বাধ্য করতে হবে।

বিভিন্ন ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া এবং নানা রকম ইউআরএল (ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটর) ফিল্টারিং করতে আইআইজিতে (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) কনটেন্ট ফিল্টারিং ডিভাইস স্থাপনের মাধ্যমে তদারকির সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে আইন করে প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়াকে বাংলাদেশে নিবন্ধনে বাধ্য করতে হবে। এসব মিডিয়াকে বাংলাদেশের ডাটা অবশ্যই বাংলাদেশের সার্ভারে রাখতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিবন্ধিত হলে ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের জন্য যে বুস্টিং হয়, সেখান থেকে বড় অঙ্কের ভ্যাট ও কর পাবে সরকার।

মুদ্রাপাচার বন্ধ করা না গেলে দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড কখনোই কাঙ্ক্ষিত গতি পাবে না। দুঃখজনক যে মুদ্রাপাচার নিয়ন্ত্রণে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা বড় ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে উদ্যোগগুলোর কোনো দুর্বলতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনি দুর্বলতা দূর করতে হবে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক গোয়েন্দা তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন