English

38 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

করোনার টিকা: পরীক্ষামূলক প্রয়োগ দ্রুত সম্পন্ন হোক

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক্স নভেল করোনাভাইরাসের যে টিকা উদ্ভাবন করেছে, বাংলাদেশের মানুষের দেহে তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়ে আমাদের সরকার সুবিবেচনার পরিচয় দিয়েছে। কারণ, কোভিড–১৯ মহামারি মোকাবিলার সরকারি উদ্যোগগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয়নি, সর্বাধিক মাত্রায় সংক্রমিত এলাকাগুলোসহ কোথাও লকডাউন ঠিকভাবে কার্যকর হয়নি; সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলাসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়টিতে সাধারণ শিথিলতা বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে কোভিড–১৯ মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে টিকাই সর্বশেষ ভরসা হিসেবে কাজ করবে। তাই বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করা এখনকার অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
এ পথে চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি। কারণ, এর ফলে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার পথ প্রশস্ত হলো। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, চীনা কোম্পানিকে অনুমতি দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ সিনোভ্যাক্সের এক লাখ টিকা ও টিকাসামগ্রী বিনা মূল্যে পাবে। এ ছাড়া ওই কোম্পানির কাছ থেকে টিকা কেনার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে। এখন প্রয়োজন চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা।
আমাদের সরকারের অনুমোদনক্রমে টিকা পরীক্ষার কাজটি সম্পাদন করবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। এ জন্য সাতটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী পরীক্ষা ও গবেষণায় অংশ নেবেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মোট ৪ হাজার ২০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর দেহে এ টিকার পরীক্ষা চলবে।
এ মুহূর্তের জরুরি করণীয় হলো টিকা পরীক্ষার কাজটি দ্রুত শুরু করা। সে জন্য কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। যেমন আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. কে জামানের ভাষ্য অনুযায়ী, টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য মাঠপর্যায়ের কিছুসংখ্যক গবেষক নিয়োগ করতে হবে এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের জন্য গুণগত মানসম্পন্ন ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং যেসব স্বাস্থ্যকর্মী এ টিকা পরীক্ষায় অংশ নেবেন, তাঁদের স্মার্টফোন নম্বরসহ নিয়মিত যোগাযোগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
মানুষের দেহে ভ্যাকসিন বা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের (ট্রায়াল) প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ ও ঝামেলাপূর্ণ। যাঁদের দেহে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা প্রয়োগ করা হবে, তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতি নিয়মিত নজর রাখা এবং তাঁদের কেউ আক্রান্ত হলে তাঁর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রস্তুতিমূলক কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন করা যায়, সে জন্য আইসিডিডিআরবি, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।
দায়িত্বশীলতার অভাব ও ব্যবস্থাপনায় ঘাটতির কারণে আমাদের দেশে অনেক জরুরি কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হয় না। আমরা আশা করব, নভেল করোনাভাইরাসের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি থাকবে না। কোনোভাবেই কালক্ষেপণ ঘটবে না বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন