English

35 C
Dhaka
মঙ্গলবার, মে ১৪, ২০২৪
- Advertisement -

কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে: দারিদ্র্য কমলেও বৈষম্য বেড়েছে

- Advertisements -
সামাজিক-অর্থনৈতিক নানা সূচকে একের পর এক অগ্রগতি বলে দিচ্ছে কাঙ্ক্ষিত পথেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিসহ ১৩৬ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুমোদন করেন। ২০১৬ সালের শেষে যখন প্রথম উন্নয়নশীল দেশসহ বৈশ্বিক অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, তখন ১৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের র্যাংকিং ছিল ১১৮। ২০২৩ সালে প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের র্যাংকিং ১৬৬টি দেশের মধ্যে ১০১তম।
এসডিজির প্রথম অভীষ্ট দারিদ্র্য বিলোপ। গত এপ্রিলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আয়োজিত খানার আয় ব্যয় জরিপ ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে জরিপের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশ।
অর্থাৎ উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মহামারির বিরূপ প্রভাবের মধ্যেও গত ছয় বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশ কমেছে। অতিদারিদ্র্যের হার ৫.৬ শতাংশ।
এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪.৩ শতাংশ। ওই বছর দেশে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ১২.৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) আয়োজিত খানার আয় ব্যয় জরিপ ২০২২ থেকে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে দেশে ধনীদের আয় আরো বেড়েছে। এতে আয়বৈষম্য আরো বেড়েছে।
যেমনদেশের সবচেয়ে বেশি ধনী ১০ শতাংশ মানুষের হাতে এখন মোট আয়ের ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয় দেশের মোট আয়ের মাত্র ১.৩১ শতাংশ। সব মিলিয়ে সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ আয় যাচ্ছে দেশের ধনী ৩০ শতাংশ মানুষের হাতে। বাকি ৭০ শতাংশ মানুষের আয় মোট আয়ের বাকি ১ শতাংশ।খানার আয় ব্যয় জরিপ ২০২২ প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২২ সালে জরিপে অংশ নেওয়া খানার আয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যে পরিসংখ্যান আমরা পাচ্ছি, তাতে দেখা যাচ্ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমেছে। এটি একদিক থেকে ইতিবাচক। কিন্তু এর সঙ্গে একটি নেতিবাচক দিকও আছে। গ্রামাঞ্চলেও আয়বৈষম্য বেড়েছে। গ্রামাঞ্চলে এখন দরিদ্র জনগোষ্ঠী ২০.৫ শতাংশ এবং শহরে ১৪.৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর দারিদ্র্যের হার অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পেরেছে। কিন্তু এখনো যে তিন কোটি ৩৩ লাখ মানুষ দরিদ্র রয়ে গেছে, সেটি সংখ্যার দিক থেকে বেশি। তবে এই সময় দেশে বৈষম্য বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সমাজে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সঠিকভাবে সবার মধ্যে বণ্টন না হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত এই বৈষম্য বাড়ছে। এখন প্রয়োজন শুধু উন্নয়ন নয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন।
সবার আগে বৈষম্য কমাতে সরকারকে কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, বিদ্যমান বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা। সেই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে আরো বেশি উদ্ভাবনী সৃজনশীলতা ও কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

আয়বৈষম্য ও ভোগবৈষম্য যদি বাড়তে থাকে, তাহলে তা প্রবৃদ্ধির ওপর আঘাত হানবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বৈষম্যের পেছনে রয়েছে ন্যায্যতা ও শোভন কর্মসংস্থানের অভাব। প্রবৃদ্ধি ও দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সরকার নিশ্চয় এ বিষয়ে নজর রাখবে।  

অতিদারিদ্র্য, ক্ষুধা, অপুষ্টি চিরতরে নির্বাসিত হোকএটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন