English

30 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

কালো ধোঁয়া নির্গমন বন্ধ করুন: ফিটনেসহীন গাড়ির ছড়াছড়ি

- Advertisements -

রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ রয়েছে যেসব শহরে, সেই তালিকায় ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। এক নম্বরে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকায় বায়ুদূষণজনিত কারণে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। কয়েক বছর আগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ২২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় বায়ুদূষণের কারণে।

এর চেয়ে অনেক গুণ বেশি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভোগে। বায়ুদূষণের নানা কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যানবাহনের কালো ধোঁয়া। এই ধোঁয়ায় থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে এর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ তৈরি করে। আর শুধু কি ফুসফুসের রোগ? অস্বাভাবিক মাত্রায় বায়ুদূষণের কারণে হৃদরোগ, লিভার-কিডনির রোগ, এমনকি ক্যান্সারের পরিমাণও দিন দিন বাড়ছে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশও ব্যাহত হচ্ছে। এর পরও এই বায়ুদূষণ রোধে আমাদের কার্যকর উদ্যোগ নেই বললেই চলে। কেন?
রাস্তায় বের হলে প্রায়ই দেখা যায়, অনেক পুরনো বা লক্কড়ঝক্কড় বাস, ট্রাক, লরি কিংবা অন্যান্য যানবাহন থেকে বিপুল কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কিছুক্ষণের জন্য বাসটির আশপাশ কালো হয়ে যায়। বৃদ্ধ ও শিশুরা রিকশায় বসে কাশতে থাকে। ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই গাড়িগুলো কালো ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে চলে যায়। পুলিশ শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। তাহলে এসব যানবাহনের বায়ুদূষণ ঠেকাবে কে? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে। নির্গত কালো ধোঁয়ার ভিত্তিতে কোনো যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে প্রয়োজন একটি বিশেষ যন্ত্র। এর মাধ্যমে নির্ণয় করতে হবে কালো ধোঁয়ার নির্গমন ক্ষতিকর পর্যায়ে হচ্ছে কি না।
আর সেই পরীক্ষাটি করতে হবে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে। মজার বিষয় হলো, বিআরটিএ এনফোর্সমেন্ট বিভাগ কিংবা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ—কারো কাছেই সেই যন্ত্রটি নেই। সেই যন্ত্র রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে। অন্যদিকে রয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর জনবল সমস্যা। সব শর্ত পূরণ করে তাই রাস্তায় কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে যন্ত্রের ব্যবহার খুব কমই হয়। আর তার সুযোগ নেয় লক্কড়ঝক্কড় যানবাহনগুলো। সেগুলো রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায়, আর প্রতিদিন শত শত মানুষের আয়ু ক্ষয় করে।
রাস্তায় কালো ধোঁয়া ছড়ায় মূলত ফিটনেসহীন গাড়ি। পুরনো লক্কড়ঝক্কড় গাড়িগুলোর ইঞ্জিনের সক্ষমতা কমে যাওয়ায় কালো ধোঁয়া বেশি ছড়ায়। সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা, বিদ্যমান গণপরিবহনের এক-তৃতীয়াংশেরই ফিটনেস নেই। ট্রাফিক পুলিশ অন্তত ফিটনেসহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু সেখানেও বিশেষ কারণে এসব যানবাহন ছাড় পেয়ে যায়।
অন্যদিকে অভিযোগ আছে, ফিট না থাকলেও বিশেষ ব্যবস্থায় এমন অনেক যানবাহন বিআরটিএর ফিটনেস সনদ পেয়ে যায়। এসব ফাঁকফোকর বন্ধ করা না গেলে যানবাহনের কালো ধোঁয়া নির্গমন বন্ধ হবে না। বিভিন্ন সময় বায়ুমান পরীক্ষায়ও দেখা গেছে, ঢাকার বাতাস শুধু ‘অস্বাস্থ্যকর’ নয়, ‘অতি অস্বাস্থ্যকর’। একে আরো অস্বাস্থ্যকর না করে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি, কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী যানবাহনের চলাচল অবিলম্বে বন্ধ করা হবে এবং বায়ুমান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন