English

27.2 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ৬, ২০২৫
- Advertisement -

ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নিন: বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা

- Advertisements -
পৃথিবী ক্রমেই উষ্ণ হচ্ছে। আর এর ফলে বদলে যাচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ুর ধরন। আবহাওয়া ক্রমেই চরম ভাবাপন্ন হচ্ছে। কোথাও বৃষ্টি নেই, খরায় সব নষ্ট হচ্ছে।
কোথাও অতিবৃষ্টি ও বন্যা সব ভাসিয়ে নিচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা দুটিই বাড়ছে। কোথাও আগুন লেগে লাখ লাখ হেক্টর বনভূমি পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে এ বছর জুলাই মাসের প্রথম ২০ দিনে বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ শতাংশ কম হয়েছে।
ভরা বর্ষায়ও চলনবিলের মতো বড় জলাভূমি প্রায় পানিশূন্য। অন্যদিকে অতিবৃষ্টির কারণে ভারতের রাজধানী দিল্লি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত। চীনের একাংশ তীব্র দাবদাহে পুড়ছে। অথচ পাশের দক্ষিণ কোরিয়া ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, কয়েক শ বছরের মধ্যে চলতি জুলাই মাস সবচেয়ে উষ্ণ মাস হতে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যেহেতু বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই গতি রোধ করার ক্ষেত্রে কার্যকর বৈশ্বিক প্রক্রিয়ার অভাব রয়েছে, তাই আশঙ্কা করা হয় আগামী দিনগুলোতেও তাপমাত্রার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং মানবসভ্যতার জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি এগিয়ে আসবে। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মতো কিছু উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশ।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে মেরু অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলছে। বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। পৃথিবীব্যাপী বিস্তীর্ণ উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলেরও এক বিরাট অংশ তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাবে।
নোনা পানির অনুপ্রবেশ বাড়বে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের আঘাত বেশি হবে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরার প্রকোপ বাড়বে। এ ছাড়া পানিবাহিত নানা রোগের পাশাপাশি কলেরা, ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো পুরনো রোগগুলো নতুন করে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এর পাশাপাশি রয়েছে অনাবৃষ্টি বা অতিবৃষ্টির ক্ষয়ক্ষতি। এতে জনস্বাস্থ্যের ওপর যেমন প্রভাব পড়ে, তেমনি ফসল উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে দুই কোটি শিশু প্রবল ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু বন্যার কারণেই প্রবল ঝুঁকিতে আছে এক কোটি ২০ লাখ শিশু।
উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে ৪৫ লাখ শিশু। লবণাক্ততার কারণে গর্ভবতী মায়েরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরার কারণে আরো প্রায় ৩০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের একটি বড় অংশই পরিবারের সঙ্গে বাস্তুচ্যুত হয়ে বড় শহরে আশ্রয় নেয়। তাদের শিক্ষা ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা জলবায়ুর পরিবর্তন রোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা যা করতে পারি তা হলো, এসবের কারণে যে প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হবে কিংবা যেসব দুর্যোগ নেমে আসবে, আগাম প্রস্তুতির মাধ্যমে সেগুলোর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
এ জন্য নিয়মিত গবেষণার পাশাপাশি প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিতে হবে। বন্যা ও জলাবদ্ধতার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নদী ও জলাধারগুলো সংস্কার করতে হবে। খরা মোকাবেলায়ও জলাধারগুলো ভূমিকা রাখবে। জনস্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তাসহ অন্যান্য দিকেও সঠিক পরিকল্পনা নিতে হবে। সরকারের গৃহীত বদ্বীপ পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/2ion
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আজকের রাশিফল

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন