একটা সময় ছিল, যখন ফাঁকা জায়গা, খেলার মাঠ এবং স্কুল-কলেজের চত্বর খেলাধুলায় মুখর থাকত। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাই স্কুল, মাদরাসা, কলেজের মাঠও দখল হয়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো মাঠ আবার খেলাধুলার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কাজে এবং ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে নিয়মিত ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়েছে, বাঁশের বেড়া দিয়ে গাছ রোপণ করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ৮২ নম্বর সাফর্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করা হয়েছে।
এতে ওই বিদ্যালয় মাঠে শিশুদের খেলাধুলা বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যিনি বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়েছেন, তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ১৯৭০ সালে সাফর্তা গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে।
পরবর্তী সময়ে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ ও ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। বিদ্যালয়ের নামে ২ নম্বর খতিয়ানে ৫৭২ নম্বর দাগে ১৫ শতাংশ এবং ৫৭৩ নম্বর দাগে ৫২ শতাংশ জমি রয়েছে।
গ্রামের লোকজন বিদ্যালয়ের মাঠ বড় করতে সামনের ৪৩ শতাংশ জমি সমিতির নামে কিনে দেওয়ার দাবি করলে সাফর্তা জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি জমির মালিক একই গ্রামের অন্য এক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে তাঁদের মধ্যে জমি বিনিময় দলিল করেন। ওই জমি বিদ্যালয়ের মাঠ হিসেবে ব্যবহার হতে থাকে। হাল রেকর্ডে এওজকৃত জমি আগের মালিকের নামে রেকর্ড হয়।
কিন্তু ওই রেকর্ডে দখল বিষয়ে অনুমতি সাফর্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্শী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের খাতায় পরিবর্তনের সূত্র ও বিবরণে ৫৭৩ নম্বর দাগে অনুমতি দং সাফর্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উল্লেখ রয়েছে।
জমির মালিকানা দাবি করে আগের মালিকের ছেলে খাজনা দিতে এবং নামজারি করাতে গেলে এ জন্য তা করাতে পারেননি। সম্প্রতি ফের ওই বিদ্যালয়ের মাঠে বাঁশের বেড়া দিয়ে গাছ রোপণ করায় নতুন করে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এই মাঠে সব ধরনের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তা-ও বন্ধ রয়েছে।
স্কুলের মাঠ দখলের ঘটনা এটাই তো আর প্রথম নয়। এলাকায় প্রভাব থাকায় এর আগেও অনেকে এ ধরনের কাজ করেছেন। বিদ্যালয়ের মাঠকে খেলার মাঠ হিসেবে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রশাসনকেই নিতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/3ne3