দেখা যায়, তাদের অনেকে ঠিকমতো বাংলা ও ইংরেজি লিখতে পারে না। বর্ণমালাই ভালোভাবে আয়ত্ত করেনি। বাংলায় যুক্তবর্ণ নিয়ে সমস্যা প্রবল। শব্দ ও বাক্য সঠিকভাবে লিখতে পারে না। কমে গেছে সাধারণ জ্ঞান, অনুধাবন ও প্রায়োগিক ক্ষমতা। এই অবস্থায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করে। জানা যায়, প্রকাশিতব্য জরিপ প্রতিবেদনেও সমস্যাগুলো বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে।
মহামারির সময় সচেতন পরিবারগুলো বাড়িতেই শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে। এই শিশুদের সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম। অনেকে দূরশিক্ষণেরও সহায়তা নিয়েছেন। কিন্তু সারা দেশের, বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বা শহরের বস্তি ও নিম্নবিত্ত এলাকার শিশুরা এ সময়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে। খসড়া প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
এই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে গড় নম্বরপ্রাপ্তি কমেছে ১৬.৪৩ শতাংশ। দ্বিতীয় শ্রেণিতে বাংলায় নম্বরপ্রাপ্তি কমেছে ১৫.২৩ শতাংশ ও তৃতীয় শ্রেণিতে ইংরেজিতে নম্বরপ্রাপ্তি কমেছে ১২.৪৯ শতাংশ। অন্যান্য বিষয়ে নম্বরপ্রাপ্তি কমার সঙ্গে বিভিন্ন মাত্রায় কমেছে শিক্ষার্থীদের সাধারণ জ্ঞান, বোঝার ক্ষমতা, প্রায়োগিক দক্ষতা এবং উচ্চমানের পারদর্শিতা।
দুই সংখ্যার যোগ ও বিয়োগ করতে পারে না ৭৩.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। ১০ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো ইংরেজিতে লিখতে পারে না চতুর্থ শ্রেণির ৭২.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। দিনাজপুরের এক শিক্ষক জানান, মধ্যম মানের প্রশ্নে উত্তর দিতে পারে না ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর সাধারণ মানের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের এই ঘাটতি পূরণ করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। জরিপ প্রতিবেদনটিতে যেসব সুপারিশ আসবে সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে এই শিশুদের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যাবে।