সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিকে শুধুই দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশের সড়ক-মহাসড়কে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, যেগুলোকে দুর্ঘটনা না বলে হত্যাকাণ্ডও বলা যায়। গত রবিবার সাভারের বলিয়ারপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীসহ চারজন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন।
এমন অনেক দুর্ঘটনাই চালকের কারণে ঘটে থাকে। অনেক চালক রাত-দিন গাড়ি চালান। অত্যধিক ক্লান্তি এবং গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে যাওয়ার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার দিক থেকে আসা বাসের ক্ষেত্রেও তেমনটি ঘটেছে। ওই বাসের চালকের সহকারীর যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে সেটাই স্পষ্ট হয়। চালকের সহকারী বা হেল্পার জানিয়েছেন, ওই বাসের চালক ছিলেন নতুন। কুষ্টিয়া থেকে তিনি ঝিমুচ্ছিলেন। এভাবেই পুরো রাস্তা গাড়ি চালিয়ে আসেন তিনি। বলিয়ারপুরে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। চালকের সহকারী স্পষ্ট করেই বলেছেন, ড্রাইভারের ঘুমের জন্য এটা হয়েছে। চালক সারা রাস্তা ঘুমোতে ঘুমোতে এসেছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ ফিটনেসবিহীন যানবাহন। বিআরটিএর সাভার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত রবিবারের দুর্ঘটনা যে বাসটির কারণে ঘটেছে, ওই বাসটিরও সড়কে চলাচলের অনুমতি (রোড পারমিট) ছিল না। এ ছাড়া বাসটির ফিটনেসের মেয়াদ ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই এবং ট্যাক্সের মেয়াদ ২০১৫ সালের ২৪ মে শেষ হয়েছে।
রোড পারমিট, ফিটনেস সনদ ও ট্যাক্সের মেয়াদোত্তীর্ণ যে বাসটি মহাসড়কে চলাচল করছিল, সেই বাসের মালিক নিশ্চয়ই আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারেন না। সর্বোপরি রোড পারমিট, ফিটনেস ছাড়া একটি বাস আন্ত জেলা যাত্রী পরিবহন করছিল, অথচ এটা দেখার কেউ ছিল না। এখন দুর্ঘটনার পর জানা গেল রোড পারমিট, ফিটনেস ছিল না।
সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নজরদারি জোরদার করা হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।