English

28.3 C
Dhaka
সোমবার, মে ১৯, ২০২৫
- Advertisement -

জননিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: মারণাস্ত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ

- Advertisements -
পুলিশের হাত থেকে মারণাস্ত্র প্রত্যাহারের সরকারি সিদ্ধান্তে মাঠ পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এক প্রতিবেদনে তাদের নানা ধরনের শঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত থানাগুলোকে অরক্ষিত করে ফেলবে এবং মনোবল ভেঙে দেবে, যা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য অশনিসংকেত।অন্যদিকে একই দিনে অন্য দুই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, লক্ষ্মীপুরে অস্ত্রের ঝনঝনানি এবং রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে দুই যুবকের প্রাণহানি।

প্রতিবেদন দুটিতে দেশে বিদ্যমান অস্ত্রের ভয়াবহ বিস্তার ও সহিংস অপরাধের চিত্র প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে।

মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের যুক্তি একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। তাদের মতে, চরমপন্থী, জঙ্গি ও মাদক কারবারিদের হাতে যখন অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র রয়েছে, তখন পুলিশের অস্ত্র দুর্বল হয়ে গেলে তাদের মোকাবেলা করা কঠিন হবে। এমনকি থানায় হামলার ঘটনাও বাড়তে পারে।

গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের সময় বহু অস্ত্র লুট হওয়ার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলতে পারে। পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও মনে করেন, সন্ত্রাসীদের চেয়ে পুলিশের অস্ত্র আরো শক্তিশালী হওয়া উচিত। তবে আইজিপি এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্যের বক্তব্যে ভিন্ন সুর পাওয়া যায়।
তাঁরা পুলিশের ‘কিলার ফোর্স’ হওয়ার ধারণার বিপক্ষে এবং উন্নত দেশের মতো নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে।
জাতিসংঘের নীতিমালাও আগ্নেয়াস্ত্রকে শেষ বিকল্প হিসেবে ব্যবহারের কথা বলে।
এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, কেন জুলাইয়ের আন্দোলন দমাতে লং ব্যারেল অস্ত্র ব্যবহার করতে হলো? সমস্যা কি কেবল অস্ত্রের, নাকি সেই অস্ত্রের ব্যবহারের নির্দেশনার? পুলিশের অস্ত্র ব্যবহারের ধরন দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অপরাধপ্রবণতার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
লক্ষ্মীপুরের চিত্র স্পষ্ট করে দেখায় যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিস্তার কতটা ভয়াবহ। সেখানে শুধু সন্ত্রাসীরা জোটবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজি, হত্যা, ধর্ষণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত। সাধারণ মানুষ ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতেও সাহস পাচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের হাত থেকে মারণাস্ত্র প্রত্যাহার একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে। যদি সন্ত্রাসীদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্র থাকে এবং পুলিশ দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন হবে। তবে পুলিশের অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করাও জরুরি।
উন্নত দেশের মতো নন-লেথাল অস্ত্রের ব্যবহার এবং পুলিশের প্রশিক্ষণে আধুনিক পদ্ধতির সংযোজন হয়তো একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান হতে পারে। এর আগে দেশের অপরাধ পরিস্থিতি, সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের সক্ষমতা এবং পুলিশের কার্যকর মোকাবেলার সক্ষমতা গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের উদ্বেগকে উপেক্ষা করা উচিত হবে না। একটি কার্যকর সমাধানে পৌঁছতে হলে সরকার, পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে একটি বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে। জনবান্ধব একটি পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তোলাই দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন