বাংলাদেশে একসময় জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা হতো। দেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়েছে। দেশ যত এগোবে কর্মক্ষম জনসংখ্যার প্রয়োজন তত বাড়বে। অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে জনসংখ্যাকে সমস্যা মনে হওয়ার একটি বড় কারণ জনসংখ্যার সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকা।
এখনো বাংলাদেশে লাখ লাখ বিদেশি কাজ করে। কারণ অনেক কারিগরি ক্ষেত্রে আমরা তরুণদের এগিয়ে নিতে পারিনি। তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে আমাদের আরো মনোযোগী হতে হবে।
শুধু জনসংখ্যা বৃদ্ধিই নয়, কর্মসংস্থান এবং বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক মানুষ শহরমুখো হচ্ছে। তাদের মধ্যে রাজধানীমুখো স্রোতই সবচেয়ে বেশি, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের চেয়ে কয়েক গুণ। অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অনেক এলাকা এখনই চাষাবাদ ও বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
বর্ধিত জনসংখ্যার এই বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সঠিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে অতি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করতে হবে। উপকূলীয় এলাকায় মানুষের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করা গেলে সক্ষম তরুণ-যুবকরা বিদেশে গিয়ে কর্মসংস্থান করতে পারত। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আমাদের অগ্রগতি প্রায় নেই বললেই চলে।
কোনো দেশের জনসংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যাওয়াটা যেমন বিপজ্জনক, কমে যাওয়াটাও বিপজ্জনক। উন্নত অনেক দেশে জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে, কর্মক্ষম জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। বাড়ছে বৃদ্ধ বা অতি বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা। ফলে অনেক দেশ জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ একটি ছোট্ট ভূখণ্ড। অথচ এর রয়েছে বিপুল জনসংখ্যা। আমাদের এখনই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এখনই এ বিষয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হতে না পারলে জনসংখ্যার এই ভার হয়তো আগামী দিনে বহন করাটা বাংলাদেশের জন্য একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে।