English

38 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

জীবিকায় করোনার আঘাত: বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নিতে হবে

- Advertisements -

করোনা মহামারি ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। লকডাউন দীর্ঘস্থায়ী করেও খুব একটা সুফল মিলছে না। এদিকে দীর্ঘস্থায়ী লকডাউনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। চাকরিনির্ভর মধ্যবিত্তদের অবস্থা খুবই খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। অনেকের চাকরি থাকলেও আংশিক বেতন পাচ্ছেন। এমন অবস্থায় তাঁদের পক্ষে পরিবার নিয়ে টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে। অনেকের যে সামান্য সঞ্চয় ছিল, তা-ও শেষ হয়ে গেছে। নিম্নবিত্ত শ্রেণির কিছু মানুষ সামান্য পরিমাণ অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলেও বেশির ভাগই তা পায়নি। বাস, লঞ্চসহ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। আগের লকডাউনের সময় জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে শ্রমিকদের আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা হলেও আজও তা তাঁদের হাতে পৌঁছায়নি। এ অবস্থায় লকডাউন যদি আরো দীর্ঘ হয়, তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা কী করবেন, কেউ-ই জানেন না।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) জরিপে উঠে এসেছে, করোনা মহামারির এ সময়ে দেশের ৬২ শতাংশ মানুষ তাদের কাজ হারিয়েছে। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) আরেকটি জরিপ অনুসারে, মহামারির প্রভাবে দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশই হচ্ছে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর সরকার মোট ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। যেগুলোর মোট আর্থিক মূল্য এক লাখ ৩১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। কিন্তু এগুলোর মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে রক্ষায় তেমন কিছুই নেই। সর্বশেষ যে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার নতুন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, সেখানেও নেই মধ্যবিত্ত শ্রেণি।

আবার যেসব ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা এসব প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা পেয়েছেন, তাঁরাও শ্রমিক ছাঁটাই করেছেন কিংবা শ্রমিকদের কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য করিয়েছেন। তাই অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রণোদনা প্যাকেজের লক্ষ্য অর্জনে সরকারের নজরদারি আরো বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও আরো মানবিক হতে হবে এবং কর্মীদের জীবন-জীবিকা রক্ষায় আন্তরিক হতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান নিতান্ত বাধ্য হয়ে কর্মী ছাঁটাই করছে, প্রয়োজনে সেসব প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে করা হচ্ছে, মহামারির প্রভাব শিগগিরই কাটবে না। সে কারণে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি দরিদ্র ও বিপদে পড়া মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে রক্ষায় সরকারের সহায়তা কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে এসডিজি অর্জন ও উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও কাজ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

এ মুহূর্তে মহামারি নিয়ন্ত্রণে বেশির ভাগ মানুষকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনা অত্যন্ত জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লাগতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষায়ও সরকারকে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন