English

25 C
Dhaka
সোমবার, মে ৬, ২০২৪
- Advertisement -

ঢাবির প্রশংসনীয় পদক্ষেপ: চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধে নীতিমালা

- Advertisements -
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে গবেষণা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গবেষণার মধ্য দিয়েই একজন শিক্ষার্থীর মেধার প্রকাশ ঘটে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই গবেষণার মান ও স্বকীয়তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। অনেকের পিএইচডি থিসিসেও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে।
নিকট-অতীতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কারো কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের চৌর্যবৃত্তি রোধে নীতিমালা চূড়ান্ত করে গত বুধবার থেকে কার্যকর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই এ ধরনের নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকর করেছে। ফলে এটি এখন আইনি কাঠামোতে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, শিক্ষকদের সব ধরনের গবেষণাকাজ এই নীতিমালার আওতায় পড়বে। গবেষণাকাজ নিয়ে প্রমাণসহ অভিযোগ করতে পারবে যে কেউ। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পর্যায়ক্রমে গঠন করা হবে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি ও তদন্ত কমিটি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ডিগ্রি বাতিল, জরিমানাসহ নানা ধরনের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এখানে যাঁরা শিক্ষা নেবেন তাঁদের সততা, নিষ্ঠা, মেধা ও মনমানসিকতা সবই সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, তার অনেক ঘাটতি রয়েছে। সে কারণেই গবেষণায়, থিসিস প্রণয়নে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ পাওয়া যায়। গবেষণার মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
এসব কারণে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক গ্রেডিংয়ে কেবলই পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রদত্ত ডিগ্রির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পূর্ণাঙ্গ গবেষণা ও ডিগ্রি অর্জনের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, কর্মকর্তাদের করা যেকোনো গবেষণাকাজ ও স্কলারলি প্রকাশনা এর আওতায় পড়বে।
পাশাপাশি আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হওয়া গবেষণাকাজসহ কাজে যোগদানের জন্য অথবা পদোন্নতির জন্য জমা দেওয়া গবেষণাকাজও এর আওতায় পড়বে। শিক্ষকদের মধ্যে নিয়মিত, খণ্ডকালীন, চুক্তিভিত্তিকসহ পাঠদানে সংশ্লিষ্টরাও নীতিমালার আওতায় আসবেন। চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীর অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় জরিমানা সাপেক্ষে পাণ্ডুলিপি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। সংশোধনে ব্যর্থ হলে ডিগ্রি বাতিল করা হবে।
রেজিস্ট্রেশন বাতিলসহ আরো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। অভিযুক্ত যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা কিংবা গবেষক হন, তাহলে অপরাপর শাস্তির পাশাপাশি ওই ডিগ্রি দিয়ে নিয়োগ, পদোন্নতির মাধ্যমে গৃহীত আর্থিক সুবিধাও ফেরত দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ডিগ্রি প্রদানকারী সুপারভাইজারও পরবর্তী তিন বছর কোনো গবেষণাকাজে সুপারভাইজার হতে পারবেন না।
গবেষণাকর্মে চৌর্যবৃত্তির এই সমস্যাটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়েরই সমস্যা। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে চৌর্যবৃত্তি প্রতিরোধের যে উদ্যোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও অনুরূপ উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন