English

29 C
Dhaka
রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

তদন্তে গতি আনতে হবে: চিকিৎসাসেবায় অনিয়মের অভিযোগ

- Advertisements -
দেশের চিকিৎসা খাতে অনেক ধরনের অনিয়মের অভিযোগ আছে। এর মধ্যে আছে ভুল চিকিৎসা, ভুয়া চিকিৎসক, রোগীর প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ না দেওয়া, সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া, রোগীর কাছ থেকে অনৈতিক অর্থ আদায়, বেসরকারি হাসপাতালে খরচের বাড়াবাড়ি, নকল ওষুধ—এমনই আরো অনেক কিছু। এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো যায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তা প্রায় জানেই না।
ফলে এসব সংস্থায় অভিযোগ আসে খুবই কম। যা-ও আসে তারও নিষ্পত্তি হতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ফলে চিকিৎসাসেবার অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ কেবলই বাড়ছে। এরই ভুল বহিঃপ্রকাশ দেখা যায় কখনো কখনো চিকিৎসক বা হাসপাতালে হামলায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের চিকিৎসাসেবা খাতকে এগিয়ে নিতে হলে এ খাতের ওপর মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে। অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগসহ মানুষের ক্ষোভ-অসন্তোষ নিরসন করা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটাই দেখা যায়। প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন অনেক তথ্য।
কাগজে-কলমে বিএমডিসির যাত্রা শুরু ১৯৭৩ সালে, কিন্তু ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত এখানে চিকিৎসাসংক্রান্ত অভিযোগ নথিবদ্ধ হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিএমডিসির নথিতে ৩১২টি অভিযোগের তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এসব অভিযোগের মধ্যে ২৭৪টির নিষ্পত্তি হয়েছে আর নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৩৮টি। নিষ্পত্তি করা অভিযোগের মধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ১৮টিতে, আপস বা মীমাংসা করা হয়েছে ১০টি, অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে চারটি, শাস্তি হিসেবে চিকিৎসকের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে একটি, কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে ১২টি। নিবন্ধন সার্টিফিকেট যাচাই করা হয়েছে ৮০টি, অভিযোগ করে পরে যোগাযোগ করেনি আটটি, অবৈধভাবে বিদেশি চিকিৎসক দেশে এসে চিকিৎসা দেওয়া সংক্রান্ত ২৮টি, ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার ও অন্যান্য ১১৩টি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গত পাঁচ বছরে এ খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ৩৫ শতাংশ নিষ্পত্তি করেছে, ৬৫ শতাংশ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অভিযোগ নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আগ্রহে ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ।
জানাশোনার অভাবে অনেক গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও মানুষ এসব সংস্থার কাছে আসে না। আবার দূর-দূরান্তের কিংবা গ্রামাঞ্চলের অনেক দরিদ্র রোগীর স্বজনদের সংগতিও থাকে না অবহেলা বা অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ জানানোর এবং বছরের পর বছর সেগুলোর পেছনে লেগে থাকার। অভিযোগ কত কম জানানো হয়, তা বোঝা যায় চলতি বছরের চার মাসের তথ্য থেকে।
এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভুল চিকিৎসা কিংবা অবহেলায় অন্তত ২০টি মৃত্যুসংক্রান্ত অভিযোগ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—এন্ডোস্কোপি করাতে গিয়ে মৃত্যু, টনসিলের অপারেশন করাতে গিয়ে মৃত্যু, চর্মরোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে মৃত্যু, পায়ের অপারেশন করাতে গিয়ে মৃত্যু, শরীয়তপুরে দুই নবজাতক এবং টাঙ্গাইল ও গোপালগঞ্জে প্রসূতির মৃত্যু। এর মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় অভিযোগ জমা পড়েছে বিএমডিসিতে।
আমরা আশা করি, দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরাতে বিএমডিসি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আরো তৎপর হবে। অভিযোগ না জানালেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত অনিয়মের তথ্য নিয়ে তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আরো বেশি তদন্ত পরিচালনা ও ব্যবস্থা নিতে পারে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন