English

24 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

নতুন দুই প্রণোদনা প্যাকেজ: সর্বোত্তম বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে

- Advertisements -

করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি আজ রীতিমতো বিপর্যস্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৩০ সালের মহামন্দার পর বিশ্ব অর্থনীতিতে এত বড় বিপর্যয় আর কখনো আসেনি। বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে। রপ্তানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। কমেছে অভ্যন্তরীণ বাজারও। ফলে শিল্প-কারখানার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়ে। কিছু কিছু কারখানা লোকবল কমাতে বাধ্য হয়। কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। অনেক কারখানা রয়েছে বন্ধ হওয়ার পথে। এই অবস্থায় গত বছর সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা ও কিছু নীতি সহায়তা উদ্যোক্তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল।

কিন্তু এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আরো ভয়ংকরভাবে ফিরে এসেছে। ফলে আবার বিপর্যয়ের মুখে চলে এসেছে কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য। তাই ব্যবসায়ীরা আবারও সরকারের প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা দাবি করে আসছিলেন। এই অবস্থায় সরকার ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার আরো দুটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছে। রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যাকেজগুলো অনুমোদন করেছেন। অনতিবিলম্বে প্যাকেজ দুটির বাস্তবায়ন শুরু হবে।

করোনা মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় নতুন দুটি প্যাকেজসহ সরকারের মোট প্রণোদনা প্যাকেজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩টিতে। এতে সরকারের মোট ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ। তদুপরি আগের নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো এবং ঋণের সুদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছিল। সরকারের এসব সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত সময়োপযোগী ও যথাযথ পদক্ষেপ।

এসব নীতি সহায়তার কারণে ব্যবসায়ীরা ক্ষতি কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা সংক্রমণে আবারও তারা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। দ্রুত কমছে উৎপাদনশীলতা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো। অথচ করোনার দ্বিতীয় দফার প্রকোপ সেসব দেশেই সবচেয়ে বেশি।

তাই তারা আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। আগের ক্রয়াদেশও অনেকে স্থগিত বা বাতিল করছে। অন্যদিকে মানুষের আয় ক্রমেই কমতে থাকায় অভ্যন্তরীণ বাজারও ক্রমে সংকুচিত হচ্ছে। ফলে অনেক শিল্পই নতুন করে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এই অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রণোদনার পাশাপাশি নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখা জরুরি। ব্যবসায়ী নেতারা মনে করছেন, নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি পুরনো প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানো এবং ঋণের সুদ কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা প্রয়োজন।

দেশে উন্নয়নের যে ধারা সূচিত হয়েছিল, করোনা মহামারি তাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। শিল্পায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হলে কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মাথাপিছু আয় কমে যাবে। দারিদ্র্য বেড়ে যাবে। তাই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আমাদের আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। পাশাপাশি ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের সর্বোত্তম বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন