English

29 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে: বছরব্যাপী খননে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

- Advertisements -

দেশের বেশির ভাগ নদীর অবস্থা ভালো নেই। নদীমাতৃক বাংলাদেশের বেশির ভাগ নদী মরে যাচ্ছে। অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ছে অনেক নদী। কোনোমতে টিকে থাকা অনেক নদীতে পড়েছে দখলদারদের থাবা। অনেক নদী হারিয়ে গেছে। একসময়ের খরস্রোতা নদীর বুকজুড়ে দেখা দিচ্ছে ধু ধু বালুচর। শুকনো মৌসুমে পানি নেই। বর্ষা মৌসুমে এই নদীই আবার দুই কূল ছাপিয়ে দুর্দশার কারণ হয়। বর্ষার পানি ধারণ করার ক্ষমতা নেই বেশির ভাগ নদীর। সুষ্ঠু পরিচর্যার অভাবে নাব্যতা হারিয়েছে অনেক নদী। এমন অনেক নদী আছে, যে নদীতে একসময় স্টিমারসহ বড় বড় নৌকা চলত, সেসব নদী আজ হেঁটে পার হওয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা নদীর আজ খুবই করুণ দশা। নদীখেকোরা শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই তৎপর।
অথচ এই নদী ঘিরে সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশ। দখল ও দূষণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরিচর্যার অভাবে সেই নদী আজ বাংলাদেশে বিপন্ন। দেশের স্বার্থে নদী রক্ষা করতে হবে। বাঁচাতে হবে দেশের সব নদী। সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। নদী সংস্কার ও পরিচর্যার গুরুত্ব বিবেচনা করেই গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় বছরব্যাপী নদী খননের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক সভাপতি শেখ হাসিনা। নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখা এবং ভাঙন প্রতিরোধে বড় নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পুরো বছরের পরিকল্পনা থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। নদীর প্রবাহ বা পানি ব্যবস্থাপনার ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। নদীর পানি যখন কমে যায়, তখন চর পড়ে বা অন্যান্য কারণে পানি বেড়ে গেলে ভাঙন শুরু হয়। তাই নদীর প্রবাহ ঠিক রাখতে বড় নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের পুরো বছরের পরিকল্পনার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রকৃতি, জনজীবন, চাষাবাদ—প্রায় সবই নদীনির্ভর। তাই বলা হয়, নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না; অর্থাৎ বাংলাদেশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। অথচ বাংলাদেশ সে পথেই এগিয়ে চলেছে। বহু নদী এর মধ্যেই মরে গেছে। বহু নদী মৃত্যুর পথে। নদীগুলোর গভীরতা কমে যাওয়ায় তখন বন্যা ও জলাবদ্ধতা অবধারিত হয়ে পড়ে। হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়।
পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, কৃষি, জীবনযাপন—সব কিছুর সঙ্গে পানির সম্পর্ক। একসময় যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল নদীপথ। দেশের বিস্তীর্ণ সেই নদীপথও আজ সংকুচিত হয়ে গেছে। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এ দেশের অনেক বাণিজ্যিক এলাকা। সেগুলোও তাদের অস্তিত্ব হারাচ্ছে। আমাদের অনেক নদী এমনিতেই মৃতপ্রায়। গ্রীষ্মে পানি মেলে না। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টিতেই দুই কূল ছাপিয়ে যায়। দখল-দূষণ রোধ করে নিয়মিত খননের মাধ্যমে নদীগুলোকে নাব্য রাখা; দখল, দূষণ ও ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া; সীমানা স্থায়ীভাবে চিহ্নিত করা—কোনো কাজই সঠিকভাবে করা হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রী বছরব্যাপী নদী খননের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর এই নির্দেশনাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প নিতে হবে। নদী বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন