English

25.4 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১০, ২০২৫
- Advertisement -

পদ্মাপারে উৎসবের ছোঁয়া: দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নের আভাস

- Advertisements -

পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যানটি বসেছে বৃহস্পতিবার। এখন দ্বিতল এই সেতুর ওপরে সড়ক ও নিচে রেলপথের স্ল্যাব বসবে। সড়কে পিচ হবে। যান চলাচল শুরু হতে অন্তত আরো এক বছর লাগবে। কিন্তু সেসব যেন কিছুই না। স্টিলের অবকাঠামোতে দুই পার সংযুক্ত হয়েছে। স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আর তাতেই মানুষের আনন্দের সীমা-পরিসীমা নেই। শেষ স্প্যান বসানোর ঐতিহাসিক মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখতে হাজার হাজার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় করেছিলেন পদ্মাপারে। উৎসবে মেতেছিলেন। শুধু পদ্মার দুই পারের মানুষই নয়, দূর-দূরান্ত থেকেও অনেকে ছুটে গিয়েছিলেন সেই উৎসবে। কয়েক শ টাকায় স্পিডবোট ভাড়া করে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকে চলে গিয়েছেন মাঝ নদীতে। রাত পর্যন্ত চলেছে এই উৎসব। পুড়েছে আতশবাজি। হাজার হাজার মানুষের চিৎকার, চেঁচামেচি ও  ছোটাছুটিতে রাতেও যেন জেগে ছিল প্রমত্তা পদ্মা।
পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির কল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলে। উন্নত দেশের আদালতেও সেটি ভুয়া প্রমাণিত হয়। অথচ আমাদের তথাকথিত সুধীসমাজ ও কিছু গণমাধ্যম রাত-দিন এক করে মাঠে নেমেছিল কুৎসা রটাতে। একের পর এক শর্ত পূরণ করেও বিশ্বব্যাংককে থামানো যায়নি। বিশ্বব্যাংক সরে যায় সেতুর অর্থায়ন থেকে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, কারো ঋণে নয়, নিজের অর্থে নির্মাণ করা হবে পদ্মা সেতু। সেটা তিনি করে দেখিয়েছেন। পদ্মাপারে উপস্থিত হওয়া অনেকেই সেই সব স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তথাকথিত সুধীসমাজকে সেদিনের ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অনেকে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানিয়েছেন।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, শুধু পদ্মা সেতুর কারণে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশের মতো বেড়ে যেতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলে লাগবে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া। পটুয়াখালীতে সৃষ্ট বিদু্যুৎ হাব এই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে পায়রা সমুদ্রবন্দরের।  মোংলা সমুদ্রবন্দরও নতুন করে প্রাণ পাবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও খুব শিগগির উৎপাদনে যাবে। পদ্মা সেতু হয়ে রেললাইন যাবে যশোর পর্যন্ত। পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেল নেটওয়ার্ক সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে।
দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক অবকাঠামোরও যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। শিল্পোদ্যোক্তারা এরই মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলমুখী হতে শুরু করেছেন। অনেকে জমি কিনেছেন। অনেকে ছোটখাটো নির্মাণকাজ শুরু করে দিয়েছেন। পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানোর প্রভাব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেও পড়তে শুরু করেছে। শেয়ারবাজার ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ চাঙ্গা ছিল বৃহস্পতিবার। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখন থেকে যত দিন যাবে অর্থনীতিতে সেতুর প্রভাব তত বেশি স্পষ্ট হতে থাকবে। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
আমরা বিশ্বাস করি, পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণাঞ্চল নয়, সারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে দেশ ক্রমেই সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/kbli
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন