গত সোমবার এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বায়ুদূষণের দিক থেকে মঙ্গলবারও ঢাকার অবস্থান ছিল বিশ্বে দ্বিতীয়। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স অনুযায়ী ঢাকার বাতাস ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’।
সারা পৃথিবীতেই বায়ুদূষণ দ্রুত বাড়ছে। এশিয়ার দেশগুলোতে এই দূষণ অনেক বেশি। আর বাংলাদেশের অবস্থান বরাবরই শীর্ষস্থানে বা শীর্ষস্থানের কাছাকাছি থাকে। বায়ুদূষণ শুধু অ্যাজমা নয়, এটি শ্বাসতন্ত্র বা ফুসফুসের আরো অনেক রোগের কারণ। বায়ুদূষণের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ক্যান্সার ও হৃদরোগও বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত।
বাংলাদেশে অ্যাজমার প্রকোপ সম্পর্কে হালনাগাদ কোনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যায় না। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশন শ্বাসতন্ত্রের অসুখ সম্পর্কে একটি জরিপ পরিচালনা করেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, বর্তমানে এই সংখ্যা এক কোটির অনেক বেশি হবে। শুধু শহর নয়, গ্রামাঞ্চলেও এখন অনেক অ্যাজমা রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলেও দূষণ ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল মঙ্গলবার সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে ‘বিশ্ব অ্যাজমা দিবস’। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘হাঁপানির যত্ন সবার জন্য’। কিন্তু বাংলাদেশে হাঁপানির যত্নের চিত্র কী? রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়লেও চিকিৎসক এবং চিকিৎসার সুযোগ তেমন বাড়ছে না।
এক হিসাবে দেখা যায়, প্রতি ৩৩ হাজার ৩৩৩ জন রোগীর জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র একজন। এটি মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ক্ষতিকর পদ্ধতির ইটভাটা, পুরনো ও ফিটনেসহীন যানবাহন, ব্যাপক দূষণকারী কারখানা, যথাযথ নিয়ম না মেনে চলা স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা, খোলা ট্রাকে বালু ও মাটি পরিবহন, খোঁড়াখুঁড়ি ইত্যাদি।
দূষণ কমাতে উচ্চ আদালত শহরের রাস্তায় শুষ্ক মৌসুমে নিয়মিত পানি ছিটানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেই নির্দেশও যথাযথভাবে পালিত হয় না।
জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্র কি সেই দায়িত্ব পালন করছে? আমরা চাই বায়ুদূষণ রোধে দ্রুত পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অ্যাজমাসহ শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের জন্য চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করা হোক।