English

29 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন: বাড়ছে লোড শেডিং

- Advertisements -

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী তেল, কয়লা, এলএনজিসহ সব ধরনের জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। তেল, কয়লা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। এসব কারণে যেমন পরিবহনের ক্ষেত্রে সংকট তৈরি হচ্ছে, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থা তো আমাদের প্রায় সবারই জানা।

বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান জ্বালানিসংকট ও মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। বিপুল ভর্তুকি দেওয়া সত্ত্বেও সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। লোড শেডিংয়ের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাময়িক এই সংকট মোকাবেলায় সবার সহযোগিতা চেয়েছেন এবং সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে যথাসম্ভব সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি লোড শেডিংয়ের রুটিন করে আগেই তা ভোক্তাদের জানিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে তাদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার তেলসহ অনেক পণ্যের ওপর পাশ্চাত্যের নিষেধাজ্ঞার ফলে সারা দুনিয়ায় এক বেসামাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভুগছে পাশ্চাত্যের দেশগুলোও। প্রতিটি দেশে মূল্যস্ফীতি চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক দেশেই সামাজিক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা শিগগিরই বিশ্বমন্দার আশঙ্কা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেক দেশেই বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং লোড শেডিং করা হচ্ছে। বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে।
বাংলাদেশেও স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের সংকট তৈরি হয়েছে। লোড শেডিং করা হচ্ছে। ভোক্তারাও তা উপলব্ধি করছে। কিন্তু পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না চলে যায় কিংবা লাগামহীন না হয়ে পড়ে সে জন্য এখন থেকেই সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২৫ ডলারের ওপরে উঠে গিয়েছিল, যা যুদ্ধ শুরুর আগেও ৬০ ডলারের কাছাকাছি ছিল। দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা মেটাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসি। বিপিসিকে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করা যাচ্ছে না।
এলএনজির দামও আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বেড়ে গেছে। তা সত্ত্বেও এলএনজিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু রাখার জন্য গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২৫ হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দিতে হবে। বেড়েছে কয়লার দামও। কয়লা ঠিকমতো পাওয়াও যাচ্ছে না। এখন দেশে উৎপাদিত গ্যাসই একমাত্র ভরসা। কিন্তু তা আমাদের চাহিদাকে কতটুকু সমর্থন দিতে পারবে। এসব কারণে সংকট উত্তরণে সবার সহযোগিতা থাকতেই হবে।

একই সঙ্গে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পোৎপাদন, সেচ সুবিধা এবং অতি জরুরি কিছু সেবা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, বিপণিবিতান, দোকানপাট, অফিস-আদালত এবং বাড়িঘরে আলোকসজ্জাসহ কম গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। অপ্রয়োজনে যেন এক মিনিটও একটি বাতি না জ্বলে সে রকম সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা আশা করি, বিদ্যুতের এই সংকট দ্রুতই কেটে যাবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন