আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার বেশি হলে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষ সংসার চালাতে ভোগান্তিতে পড়ে।কয়েক অর্থবছর ধরে চলা এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। প্রভাব পড়ছে মানুষের যাপিত জীবনে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের সক্রিয়তা ধারাবাহিক নয়। ভোক্তারা এতে পণ্যের বাজারে প্রত্যাশিত সুবিধা পাচ্ছেন না।
তাঁরা বলছেন, তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছেন। এখনই লাগাম টেনে ধরতে না পারলে বাজারে অস্থিরতা বাড়বে।
ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভলান্টারি কনজিউমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজার নিয়ন্ত্রণহীন।
এর পেছনে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য।’ সরকারকে দ্রুত বাজার তদারকিতে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ।
বিশ্লেষণ বলছে, চালের বাজারে যেমন মিল মালিকরাও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন, তেমনি নতুন ওঠা কৃষিপণ্য ও আমদানি করা ডাল বা চিনির বাজারেও মজুদদারির অভিযোগ প্রবল। টিসিবির কার্যক্রম চলছে, কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল।
এই সংকট শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিকও। দ্রব্যমূল্যের এই লাগামছাড়া পরিস্থিতি সমাজে ক্ষোভ, অবিশ্বাস এবং হতাশার বিস্তার ঘটাচ্ছে।
বাস্তবতা হলো আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গিয়েছিল, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার সাড়ে আট মাস পরও সেটা কমানো যায়নি। মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্যের হার বেড়ে চললেও সরকার প্রতিকারে টেকসই কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
সীমিত আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও চলছে ঢিমে তালে। সামাজিক সুরক্ষায় তৈরি কার্ডের তালিকা নিয়েও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া শুধু আমলাদের দিয়ে সেটা করা সম্ভবও নয়। আমরা মনে করি, সরকারকে আরো শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। নিয়মিত বাজার তদারকির পাশাপাশি বিকল্প উপায় পণ্য সরবরাহ বাড়াতে হবে।