এই রায় একদিকে যেমন ভুক্তভোগী পরিবারকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেবে, তেমনি সমাজে একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছবে যে এমন নৃশংসতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
তবে এই রায়ের পাশাপাশি আরো কিছু প্রশ্ন সামনে এসে দাঁড়ায়। মামলার বাকি তিন আসামি খালাস পাওয়ায় আছিয়ার মায়ের হতাশা অমূলক নয়। বাকিদের খালাস নিয়ে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজ্ঞরাও প্রশ্ন তুলেছেন।
উন্নয়নশীল দেশে ক্রমবর্ধমান যৌন সহিংসতার পেছনে থাকা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত কারণগুলো খতিয়ে দেখা এবং এর প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
ভারতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট, রুয়ান্ডার নারীবান্ধব সংস্কার, সুইডেনের সম্মতিভিত্তিক ধর্ষণ আইন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার থুথুজেলা কেয়ার সেন্টারগুলো প্রমাণ করে যে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তার পরও নারী ও শিশু নির্যাতনের চিত্র উদ্বেগজনক। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতনের ৬৪ শতাংশই ধর্ষণের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে শুধু কঠোর শাস্তি নয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া জরুরি।
পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধি, সামাজিক মূল্যবোধের জাগরণ এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমেই একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। একই সঙ্গে আইনি দুর্বলতা দূর করা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি করা অত্যাবশ্যক।