English

26.4 C
Dhaka
মঙ্গলবার, মে ২০, ২০২৫
- Advertisement -

রায় দ্রুত কার্যকর করুন: শিশু ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড

- Advertisements -
সাম্প্রতিককালে নারীর প্রতি সহিংসতার এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এই প্রবণতা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মাগুরার চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। দ্রুত বিচার ও অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির রায় হওয়ায় বিচার বিভাগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।

এই রায় একদিকে যেমন ভুক্তভোগী পরিবারকে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দেবে, তেমনি সমাজে একটি স্পষ্ট বার্তা পৌঁছবে যে এমন নৃশংসতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।

তবে এই রায়ের পাশাপাশি আরো কিছু প্রশ্ন সামনে এসে দাঁড়ায়। মামলার বাকি তিন আসামি খালাস পাওয়ায় আছিয়ার মায়ের হতাশা অমূলক নয়। বাকিদের খালাস নিয়ে মানবাধিকারকর্মী ও আইনজ্ঞরাও প্রশ্ন তুলেছেন।

তাঁদের মতে, ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ড ঘটলেও যাঁরা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন, আলামত নষ্ট করেছেন, তাঁদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, রাষ্ট্রপক্ষের উচিত উচ্চ আদালতে আপিল করা এবং অপরাধে পরোক্ষভাবে জড়িতদের দায় নিরূপণ করে শাস্তি নিশ্চিত করা।শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি আবারও আমাদের সমাজের এক গভীর ক্ষত উন্মোচন করেছে। কেন একটি নিষ্পাপ শিশুকে এমন ভয়াবহ পরিণতির শিকার হতে হলো? কেন যাদের আশ্রয়ে বড় হওয়ার কথা, তাদের হাতেই ঘটে সর্বনাশ?

উন্নয়নশীল দেশে ক্রমবর্ধমান যৌন সহিংসতার পেছনে থাকা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত কারণগুলো খতিয়ে দেখা এবং এর প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

অন্যদিকে সাইবার বুলিং বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্তা ও ডিজিটাল নির্যাতন মাত্রা ছাড়িয়েছে। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ২০২২ সালে একটি গবেষণায় দেখিয়েছিল, বাংলাদেশে ৬৪ শতাংশ নারী কোনো না কোনোভাবে অনলাইন নির্যাতন ও ভায়োলেন্সের শিকার হন।জুলাই অভ্যুত্থানের সময় থেকে এ পর্যন্ত এই ভায়োলেন্সের হার সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের নারী সমন্বয়ক ও সক্রিয় কর্মীদের আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকল্পনীয় ও অকথ্য নির্যাতনের শিকার হতে দেখছি। অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা শিখতে পারি।

ভারতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট, রুয়ান্ডার নারীবান্ধব সংস্কার, সুইডেনের সম্মতিভিত্তিক ধর্ষণ আইন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার থুথুজেলা কেয়ার সেন্টারগুলো প্রমাণ করে যে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তার পরও নারী ও শিশু নির্যাতনের চিত্র উদ্বেগজনক। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, নারী ও শিশু নির্যাতনের ৬৪ শতাংশই ধর্ষণের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে শুধু কঠোর শাস্তি নয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া জরুরি।

পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধি, সামাজিক মূল্যবোধের জাগরণ এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমেই একটি নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। একই সঙ্গে আইনি দুর্বলতা দূর করা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি করা অত্যাবশ্যক।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন