English

28.5 C
Dhaka
বুধবার, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫
- Advertisement -

শাঁখের করাত: আইএমএফের শর্তের ফাঁদে অর্থনীতি

- Advertisements -
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ৪৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় নানা ধরনের শর্ত ও লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এতই ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য আইএমএফের শর্ত না মেনে উপায় ছিল না।সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বাড়লেও বিপদ পুরোপুরি কেটেছে বলা যায় না। এই অবস্থায় সরকারের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো।
আইএমএফের শর্ত না মানলে ঋণ পাওয়া যাবে না। আর মানতে গেলে তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন স্তরে। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নতুন ৩৩টি শর্তের গ্যাঁড়াকলে পড়ে সংস্থাটির মন রক্ষা করতে সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানও গলদঘর্ম। ঋণ পেতে আইএমএফের একের পর এক প্রেসক্রিপশনে কমছে করছাড়, ভর্তুকি।

বাড়ছে ভোক্তার করের বোঝা। এমন সব প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে বলছে সংস্থাটি, যার ফলে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতেও পরিবর্তন হচ্ছে।

এই বাস্তবতায় অনেক শর্ত মানার পরও এরই মধ্যে ঋণের দুটি কিস্তি আটকে দিয়ে টালবাহানা করছে সংস্থাটি। অর্থ উপদেষ্টাও সংস্থাটির কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে প্রয়োজনে ঋণ না নেওয়া, এমনকি সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, আইএমএফের শর্ত সব দেশে সমান কাজ করে না।
বিশ্লেষকরা দাবি করেন, সংস্থাটির কিছু শর্ত অর্থনীতির জন্য সহায়ক হলেও কিছু শর্ত স্বার্থবিরোধী। এসব শর্ত মানতে গিয়ে জ্বালানি, কৃষি ও সারে ভর্তুকি কমানো, রাজস্ব বাড়ানোর চাপে বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ও উদীয়মান শিল্পে করছাড় তুলে দেওয়া, সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি ও ধার না দেওয়া, বেসরকারি খাতের ঋণের কিস্তি শোধের সময় এগিয়ে আনা ইত্যাদি নীতির বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে।
এর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ভোক্তাসাধারণসহ ঘুরেফিরে সব স্তরেই পড়ছে। এর বাইরেও সরকারের অনেক সংবেদনশীল বা স্পর্শকাতর খাতে নজরদারির মতো কাজেও যুক্ত হতে চায় সংস্থাটি।
অনেক ক্ষেত্রে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সরকারও বেশ অসন্তোষের মধ্যে রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, আর্থিক খাতে যত শর্ত দেওয়া হয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে এর কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সুযোগ থাকলেও ক্ষতির মাত্রাও কম নয়। সুদের হার, মুদ্রার বিনিময় হার, খেলাপি ঋণ কমানো, ডলারের দর বাজারমুখী করা, রিজার্ভ গণনাসহ এমন সব শর্তের কথা বলা হয়, যার ফলে অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে।রাষ্ট্রায়ত্ত ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের ভর্তুকি তুলে দিতে চাপ দেয় সংস্থাটি। অলাভজনক বিবেচনায় এসব প্রতিষ্ঠানকে আর সহায়তা না দিতে পরামর্শ দেয় আইএমএফ।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এগুলো সরকারকে মুনাফা দেয় না সত্য, তবে অর্থনীতিতে, মানুষের জীবনমানে এসব সংস্থার অবদান রয়েছে। আকস্মিক ভর্তুকি তুলে দিলে অনেক খাতের বসে পড়ার ঝুঁকি থাকে। আইএমএফ রাজস্ব, আর্থিক, জ্বালানি, সামাজিক নিরাপত্তা—এই চারটি খাতেই দৃশ্যমান বড় সংস্কার করতে চায়। তাদের পরামর্শে রাজস্ব খাতে এমন সব নীতি-কৌশল নেওয়া হচ্ছে, যার ফলে ভোক্তার ওপর বাড়ছে করের বোঝা। সব মিলিয়ে এসবের ইতিবাচকের চেয়ে নেতিবাচক ফল গিয়ে পড়ছে মানুষের জীবনযাপনে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/a4gu
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন