English

36 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

শিক্ষার্থীদের আওতা বাড়ানো হোক: স্বল্প খরচে ইন্টারনেট সুবিধা

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল স্বল্প সময়ে এ সংকট কেটে যাবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই বলে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকতে পারে না। এ কারণে প্রথমেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। পরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এগিয়ে আসে, যদিও এখনো অর্ধেকসংখ্যক শিক্ষার্থী এ কার্যক্রমের বাইরে রয়েছে। এর অন্যতম কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা শিক্ষার্থীদের অনেকেরই স্মার্টফোন নেই। ফলে তাঁরা অনলাইনে ক্লাস করতে পারছেন না।
আরও অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে নিয়ে আসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ দেওয়ার সুপারিশ করে। এর আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতিও সরকারের কাছে অনুরূপ দাবি জানায়। সেটি জুন মাসের কথা। সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে তখনো কোনো উচ্চবাচ্য ছিল না। গত ৬ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ইউজিসির প্রস্তাবের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বলেছিলেন, করোনার কারণে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু আর্থিক কারণে অনেক শিক্ষার্থীর জন্য সেই কার্যক্রমের ব্যয়ভার বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কঠিনকে সহজ করার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে যতটা উদ্‌গ্রীব, পাঠদান নিয়ে ততটাই উদাসীন।
শিক্ষামন্ত্রী ফ্রি ইন্টারনেট প্যাকেজ অথবা কম খরচে ইন্টারনেট সুবিধা নিয়ে আলোচনা চলার কথা বলেছিলেন জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে। আর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত এল সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখে। মাঝখানে প্রায় দুই মাস চলে গেছে। গত বুধবার সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক স্বল্প খরচে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টেলিটক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নামমাত্র মূল্যে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ দেবে টেলিটক। ইউজিসি পরিচালিত বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা এ সেবা নিতে পারবেন। বর্তমানে ৪২টি পাবলিক ও ৬৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিডিরেন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে থাকে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি মাসে ১০০ টাকা দিতে হবে।
টেলিটকের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে এ–ও মনে করি যে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় সব মোবাইল অপারেটরের এগিয়ে আসা উচিত। এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। একটি মাত্র মোবাইল অপারেটরের পক্ষে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অনলাইন সুবিধা দেওয়া সম্ভব না–ও হতে পারে। টেলিটকের সেবার মান খুব উন্নত, তা–ও বলা যাবে না।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের দাবি, কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের স্বল্প খরচে কিংবা বিনা মূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা দিতে হবে। তাঁদের এ দাবি অযৌক্তিক নয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। তাদের ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে রেখে সরকারের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম সফল করা যাবে না।
সবার আগে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ দেখতে হবে। প্রয়োজনে ইউজিসির চেয়ারম্যানের সুপারিশ অনুযায়ী আগ্রহী শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, শিক্ষা খাতে যেকোনো ব্যয় দেশ ও জাতির বড় বিনিয়োগ।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন