English

27.2 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫
- Advertisement -

শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই সংকট : ব্যর্থতার দায় কার?

- Advertisements -

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও ১৮ কোটি পাঠ্যবই ছাপা বাকি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ছাপাখানাগুলোকে অন্যান্য প্রেসের মাধ্যমে কাজ শেষ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা আগের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই দেরির পেছনে একাধিক কারণ থাকলেও মূল সমস্যা ছাপাখানার সীমিত সক্ষমতা, কাগজ ও বাঁধাইকর্মীর সংকট, এবং দরপত্রের শর্ত বাস্তবায়নের ব্যর্থতা।

এনসিটিবি দাবি করেছিল যে ছাপাখানাগুলো প্রতিদিন এক কোটি ৪২ লাখ বই ছাপাতে পারবে, কিন্তু বাস্তবে ছাপা হচ্ছে মাত্র ৪০ লাখ। কেন এই বিশাল পার্থক্য? প্রকাশকরা বলছেন, কাগজ ও বাইন্ডিং সংকট, ব্যাংক ঋণের জটিলতা এবং নোট-গাইড প্রকাশকদের উচ্চ মজুরিতে কর্মী নেয়ার কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ছাপাখানার সক্ষমতা সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া হয়, তবে দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় এসব বিবেচনায় নেয়া হলো না কেন?

শিক্ষার্থীরা বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পায়নি। এই সংকট প্রাথমিক ও মাধ্যমিক উভয় পর্যায়েই ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণীর বই ছাপার অগ্রগতি মাত্র ৩৪ শতাংশ।

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বই ছাপার কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হলেও অন্যান্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এখনও দুশ্চিন্তায় রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বই পড়তে পারছে বলে এনসিটিবি দাবি করলেও, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেকেরই ডিজিটাল ডিভাইস নেই, এবং প্রিন্ট করা কপি নেয়ার খরচও অনেক বেশি। ফলে, এই সমাধান কার্যকর নয়।

প্রতি বছর পাঠ্যবই ছাপার কাজ শুরু হয় জুলাই-আগস্ট মাসে, কিন্তু এবার তা শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসে।

এই দেরির জন্য দায়ভার কার? এনসিটিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কাগজের সংকট, ব্যাংক ঋণের বিলম্ব এবং বাইন্ডিং সমস্যার কথা, কিন্তু এগুলো যে আগে থেকে পূর্বানুমান করা সম্ভব ছিল না, এমন নয়।

প্রশ্ন হলো, এনসিটিবি কেন এমন ছাপাখানাগুলোকে কাজ দিয়েছে যাদের প্রকৃত সক্ষমতা নেই? দরপত্র চূড়ান্ত করার সময় কী ধরনের যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল?

যদি ছাপাখানাগুলোর সক্ষমতা তিন ভাগের এক ভাগ হয়, তবে কেন তাদের এত বেশি কাজ দেয়া হলো?

যথাসময়ে বই ছাপতে না পারা প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেই তুলে ধরে। এই ব্যর্থতার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়েও একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থা একটি জাতির উন্নতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি।

পাঠ্যবই বিতরণে এই ধরনের অব্যবস্থাপনা ভবিষ্যতে রোধ করতে হলে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। নাহলে এই সংকট প্রতি বছরই পুনরাবৃত্তি হবে, আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে আগামী প্রজন্ম।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/1s8b
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আজকের রাশিফল

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন