English

32 C
Dhaka
বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
- Advertisement -

শুরু হলো ভাষার মাস: রোজার আগে দাম বাড়ানোর চেষ্টা

- Advertisements -
শুধু ভাষার মাস নয়, আত্মপ্রত্যয় ও জাতীয়তা বোধে উজ্জীবিত হওয়ার মাসও এই ফেব্রুয়ারি। প্রাণপ্রিয় বাংলা ভাষা ও বাঙালির সংস্কৃতি রক্ষার তাগিদে ১৯৫২ সালের এই মাসে বাঙালি জাতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। প্রাণের ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। সেদিন বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামও বেগবান হয়েছিল।
তারই সূত্র ধরে এসেছিল উনসত্তরের গণ-আন্দোলন এবং একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এলো স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি নিয়ে আমাদের এত অহংকার, এত গর্ব। আজ সারা দেশে এই মাসের সূচনা হবে নানা আনুষ্ঠানিকতায়।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হবে নানামুখী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। সারা মাস চলবে এসব আয়োজন। অনুরূপ কর্মসূচি থাকবে দেশের অন্যান্য স্থানেও।
আর একুশে ফেব্রুয়ারি প্রত্যুষে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সারা দেশের শহীদ মিনারগুলো ফুলে ফুলে ভরে যাবে। লাখো কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ জাতি শপথ নেবে নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মান রক্ষার জন্য।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই পাকিস্তানের শাসকরা ঘোষণা করেছিল ‘উর্দু এবং একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। এমন ঘোষণা শুনে বাঙালি জাতির পক্ষে দেশপ্রেমিক তরুণরা প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে।
প্রতিবাদী তরুণরা সেদিন পাকিস্তানি শাসকদের মুখের ওপর জানিয়ে দিয়েছিল, ‘না’। তার পরই স্লোগান ওঠে, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। সেই আন্দোলন ছড়িয়ে যায় বাংলার আনাচকানাচে। আন্দোলন ক্রমেই বেগবান হতে থাকে।
ক্রমে তার সঙ্গে যুক্ত হতে থাকে বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তা তুঙ্গে ওঠে। আন্দোলন দমাতে পাকিস্তানের শাসকরা ১৪৪ ধারা জারি করে। শাসকদের পেটোয়া বাহিনী বন্দুক উঁচিয়ে পথ রোধ করে।
কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাতে বন্দুকের নল অগ্রাহ্য করে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায় ছাত্র-জনতা। পাকিস্তানি পুলিশও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। কিন্তু শাসকের বুলেট আন্দোলন থামাতে পারেনি।
মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেওয়ার এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর সেই বিরল আত্মদানের স্বীকৃতি হিসেবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই আজ একুশে ফেব্রুয়ারিকে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয়, এমন এক গর্বিত অহংকারের উত্তরাধিকারী হয়েও আমরা আজ পর্যন্ত আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বত্র বাংলার প্রচলন নিশ্চিত করতে পারিনি।
ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিচ্ছি। ১৯৩৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, এরপর ১৯৯৪ সালে বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম করেছে, অথচ আমরা বাংলা লিখছি যে যার ইচ্ছামতো। প্রিয় বাংলা ভাষাকে প্রকৃত মর্যাদা দিতে আমাদের এই স্বেচ্ছাচারিতা থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে।
বৈশ্বিক প্রয়োজনে আমাদের ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষাও শিখতে হবে। একই সঙ্গে মাতৃভাষার চর্চাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বাংলা ভাষার ব্যবহার বাড়াতে হবে।
ভাষার মাসে আমাদের চেতনাকে শাণিত করতে হবে, মাতৃভাষার প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে হবে। কেবল আনুষ্ঠানিকতা নয়, প্রাত্যহিক জীবনে তার প্রয়োগ ঘটাতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন