অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও দেশের অনেক বীমা কম্পানি শেয়ারবাজারে আসেনি। অর্থমন্ত্রী ২০১৯ সালে বলেছিলেন, তিন মাসের মধ্যে দেশের সব বীমা কম্পানি শেয়ারবাজারে না এলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। কিন্তু তিন মাসের জায়গায় আরো অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
যেসব বীমা কম্পানি এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে আসেনি, তাদের কাছেও কিছু যুক্তি আছে। যদিও সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা এগুলোকে যুক্তি না বলে অজুহাত বলতে চান। শেয়ারবাজারে না আসার পেছনে কম্পানিগুলোর প্রধান যুক্তি হচ্ছে, মুনাফা না হওয়া। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধিমালা, দেশের বীমা খাতের নাজুক অবস্থাসহ নানা অজুহাতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বীমা কম্পানি।
এর মধ্যে কিছু কম্পানির বয়স দুই দশকেরও বেশি। গ্রাহককে সব রকমের অর্থ পরিশোধ করার পর এত দিন শেয়ারবাজারে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত মুনাফা ছিল না। কারণ শেয়ারবাজারে যাওয়ার জন্য কম্পানির কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা থাকতে হবে। বীমা আইন করা হয় ২০১০ সালে। আইন অনুযায়ী কোনো বীমা কম্পানিকে লাইসেন্স পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে যেতে হবে। দেশের আর্থিক খাতের ব্যাংক ও লিজিং কম্পানির বাইরে আরেকটি বিভাগ হচ্ছে বীমা কম্পানি।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে বীমার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ২০১১ সালে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বীমা খাতের বেশ কিছু অনিয়ম দূর হলেও অনেক বীমা কম্পানি এখনো নিয়মনীতি মানছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। নতুন যে ১৫টি কম্পানিকে আইডিআরএ ২০১৫ সালে লাইসেন্স দিয়েছে তাদের কেউ এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি। বীমা কম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসতে চায় না কেন? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তালিকাভুক্ত হলে কোনো রকমের অনিয়ম করতে পারবে না। তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোকে তিন মাস পর পর অডিট রিপোর্ট জমা দিতে হয়। ফলে কম্পানির স্বচ্ছতা বাড়বে, স্বেচ্ছাচারিতা কমবে।
ভালো কম্পানি আনার প্রসঙ্গে বাজারে বীমা কম্পানিগুলো নিয়ে আলোচনা আছে। যারা দেশের বীমা খাতের বেশির ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে, সেই সব কম্পানি শেয়ারবাজারে আনতে হবে। এসব কম্পানিকে আনতে না পারলে, যাদের ব্যবসায় নেই, তাদের কয়েক ডজনকে লিস্টিংয়ে এনে তো লাভ নেই।