মিরপুর রোডের সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় তিনতলা একটি ভবন বিস্ফোরণে আংশিক ধসে পড়ে। দুই বছর আগে মগবাজারে একটি চারতলা ভবন ধসে পড়েছিল বিস্ফোরণে। এর বাইরেও ছোটখাটো বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে ঢাকায় দুই বছরে।
বঙ্গবাজারে আগুন লাগে গত মঙ্গলবার সকালে। আগুনে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের এনেক্স টাওয়ার এবং আরো কিছু ভবন। শুক্রবার সকালে পুরোপুরি নির্বাপণ করার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস।
রাজধানীতে প্রতিটি অগ্নি ও বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে সচেতন হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। একেকটি ঘটনা ঘটার পর একাধিক তদন্ত কমিটি হয়। এসব তদন্ত কমিটি একাধিক প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে কিছু সুপারিশও থাকে। কিন্তু সেসব সুপারিশ বাস্তবায়িত হতে দেখা যায় না। বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর রাজধানী ঢাকার অনেক বিপণিবিতান ও ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
শুধু ঢাকা নয়, প্রশ্ন উঠেছে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন শহরগুলোতে গড়ে ওঠা মার্কেটের অগ্নি ও বিস্ফোরণ নিরাপত্তা নিয়ে। এসব মার্কেটে কি ‘ফায়ার সেফটি প্ল্যান’ আছে? অগ্নিঝুঁকি নিরূপণ, ফায়ার অ্যালার্ম, জরুরি নির্গমনব্যবস্থা, অগ্নিমহড়া ইত্যাদি কি নিশ্চিত করা হয়েছে? এসব অবকাঠামো কি দুর্যোগ সহনশীল?
কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, আগুনের অতিঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা ও ঢাকার উপকণ্ঠের ৪১টি ভবন। এর মধ্যে ১৫টি ভবন রয়েছে ঢাকায়। এসব ভবনের অগ্নিনিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল। আগুন লাগলে দ্রুত ভবন থেকে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আলাদা পথ নেই। এতে বঙ্গবাজারের মতো বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, অগ্নিঝুঁকির বিষয়ে বেশির ভাগ ভবনকে এ ব্যাপারে একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও তারা তা আমলে নেয়নি। এ জন্য তারা আবার নতুন করে জরিপ শুরু করেছে। প্রথম দিন রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন করে দেখা গেছে মার্কেটটি অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। আগুন নেভাতে যেসব ব্যবস্থা থাকা দরকার, তার বেশির ভাগই নেই। ২০২০ সালে এই মার্কেটে একটি মহড়া শেষে বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল, তার অনেকগুলো বাস্তবায়িত হয়নি।
জরিপ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এখন কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনো অগ্নিদুর্ঘটনায় জান-মালের ক্ষতি মেনে নেওয়া যাবে না। সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে।