English

29 C
Dhaka
শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

সমন্বিত ব্যবস্থা নিন: চট্টগ্রামে কলেরার প্রাদুর্ভাব

- Advertisements -
সাধারণত গরমের সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ কিছুটা বাড়ে। কারণ এ সময় অতিরিক্ত গরমে মানুষের তেষ্টা পায় বেশি এবং তেষ্টা মেটাতে যেখানে-সেখানে পানি পান করে। এতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হার বেড়ে যায়। কিন্তু চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে যে হারে ডায়রিয়া রোগী শনাক্ত হচ্ছে তাকে চিকিত্সকরা খুবই অস্বাভাবিক মনে করছেন।শুধু ডায়রিয়া নয়, কলেরায় আক্রান্ত রোগীও পাওয়া যাচ্ছে অনেক। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, নগরের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে ১৫ এপ্রিল থেকে ৮ মে পর্যন্ত ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছিল এক হাজার ৯৪ জন। এর মধ্যে ৩১২ জন রোগী কলেরা জীবাণুর আরডিটি পরীক্ষার জন্য নমুনা দেয়।

এসব নমুনা পরীক্ষায় ১৩৭ জনের কলেরা শনাক্ত হয়েছে। সে হিসাবে পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল ৪৩.৯১ শতাংশ। অন্যান্য সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকেও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিত্সা হচ্ছে। সেখানেও কলেরা রোগী থাকতে পারে।

এরই মধ্যে ঢাকা থেকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধিদল চট্টগ্রামে গেছে। তারা গত সোমবার থেকে কাজ করেছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও একই দিন থেকে আলাদাভাবে কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশ থেকে কলেরা প্রায় নির্মূল করা সম্ভব হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে আবার কলেরার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি এর চিকিত্সাসংশ্লিষ্ট সবার কপালে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

এ বছর এপ্রিলের শেষ দিক থেকেই সারা দেশে তীব্র গরম পড়ছে। তেষ্টা মেটাতে মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ যেখানে-সেখানে পানি পান করেন। এটি ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার একটি কারণ হতে পারে। চিকিত্সকরা মনে করেন, এ ছাড়া ডায়রিয়ায় ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হওয়ার আরো কারণ থাকতে পারে।

অনুসন্ধান কাজ শেষ হলেই প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন আলামতকে হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ডায়রিয়া একটি জীবাণুঘটিত রোগ এবং জীবাণু ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার কারণেই ডায়রিয়ার প্রকোপ এত বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সঙ্গে কলেরার উপস্থিতি প্রমাণ করে শুধু ডায়রিয়া নয়, কলেরার জীবাণুও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। কিভাবে সেই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে তা জানতে হবে এবং প্রতিরোধের জন্য দ্রুত সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজ্ঞানীরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ অনেক বাড়তে পারে। নতুন করে কলেরার প্রাদুর্ভাবও দেখা দিতে পারে।বিজ্ঞানীদের সেই আশঙ্কাই আজ সত্য প্রমাণিত হচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে কলেরা আবার মহামারি আকারে ফিরে আসতে পারে।

ডায়রিয়ার এমন ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের কারণ অনুসন্ধান করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষকেও অনেক বেশি সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। খোলা ও বাসি খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে।

বিশুদ্ধ পানি পান করার কিংবা  ফুটিয়ে পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এসব ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ কর্মসূচি পালন করতে হবে। ওয়াসাকে নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। গ্রাম এলাকায় নলকূপের ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমরা আশা করি, খুব দ্রুত চট্টগ্রামের ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন