তবে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে শ্রমবাজার পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে যে তিনটি শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে দেয়। মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, শ্রমিকের নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষা এবং অভিবাসন ব্যয় কমাতে সহযোগী এজেন্সি প্রথা বাতিলের মতো শর্তগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, অতীতে এসব ক্ষেত্রে যে গাফিলতি ও দুর্নীতি দেখা গেছে, তা কি এবার সত্যি রোধ করা সম্ভব হবে?
দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার ও বন্ধ হওয়ার যে খেলা চলছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভাগ্যান্বেষী তরুণরা। একদিকে যেমন তাঁদের স্বপ্ন ভঙ্গ হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে দালাল ও সিন্ডিকেটের একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এই প্রতারণার পেছনে দায়ী। ২০১৮ সালেও একই কারণে বাজারটি বন্ধ হয়েছিল এবং ২০২১ সালে পুনরায় চালুর পরেও দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ফের বন্ধের মুখে পড়ে।
আশার কথা এই যে মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে বিপুলসংখ্যক বিদেশি কর্মী নেওয়ার পরিকল্পনা করছে এবং বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে আমাদের অবশ্যই অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে।সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য বাজার উন্মুক্ত করা এবং মাল্টিপল ভিসার সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি যৌক্তিক। একই সঙ্গে মালয়েশিয়ায় অনিয়মিত হয়ে পড়া কর্মীদের নিয়মিতকরণের বিষয়টিও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা উচিত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বারবার শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের প্রতারিত করার সঙ্গে জড়িত চক্রকে আইনের আওতায় আনা। উভয় দেশের সরকারকেই এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে এমন অপকর্ম করার সাহস দেখানোর লোকের অভাব হবে।