English

29.2 C
Dhaka
শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
- Advertisement -

স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি: ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন

- Advertisements -

দেশে করোনাভাইরাসের মহামারি চলছে। মহামারি বিস্তারের গতি রুখতে দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। আইসিইউ সেবা দেওয়া জরুরি হলেও অনেক রোগীকেই সেই সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এক দিনে শতাধিক রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। স্বজন হারানোর বেদনায় মানুষের আহাজারি আকাশ-বাতাস ভারী করে তুলছে। এই যখন দেশের পরিস্থিতি, তখন স্বাস্থ্য খাতের কিছু লোক মেতে উঠেছে লুটপাটের মহোৎসবে। সাড়ে তিন শ টাকার কম্বল কেনা হচ্ছে দুই হাজার ৪১৮ টাকায়।

মেশিন, উপকরণ হাতে না পেয়েই কোটি কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। নিম্নমানের কিংবা ব্যবহারের অনুপযোগী উপকরণ কেনা, প্রয়োজন না থাকলেও যন্ত্রপাতি-উপকরণ কেনা, অনুমোদনহীন কেনাকাটাসহ আরো বহু অনিয়মই হয়েছে এই সময়ে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা বিভাগের সাম্প্রতিক নিরীক্ষায় উঠে এসেছে এমন মোট পৌনে চার শ কোটি টাকার অনিয়মের চিত্র। আর এসব অনিয়ম হয়েছে করোনা চিকিৎসায় নিবেদিত ঢাকার ৯টি হাসপাতালে। ধারণা করা হয়, তার সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্বাস্থ্য খাতের আরো অনেক রাঘব বোয়াল।

দেশে নীতি-নৈতিকতাহীন মানুষের সংখ্যা কম নয়। এর আগে বালিশকাণ্ড, টাকার বালিশ, নির্মাণে রডের জায়গায় বাঁশ ব্যবহারসহ অনেক অনিয়মের কথা আমরা শুনেছি। এই স্বাস্থ্য খাতেও নিকট অতীতে অনেক কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে। উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তাকে দায় নিয়ে বিদায় হতে হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তেও অনেক কর্মকর্তার দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে।

কিন্তু তাতে কি দুর্নীতি কমেছে? দুর্নীতি যে কমেনি তার প্রমাণ দিল ঢাকার ৯টি সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালগুলো হচ্ছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।

অথচ এই হাসপাতালগুলোতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জীবন বাঁচাতে প্রতিদিন ছুটে আসে কয়েক হাজার মানুষ। নকল এক্স-রে ফিল্ম আর ভেজাল উপকরণ দিয়ে করা রোগ পরীক্ষায় তাদের সঠিক চিকিৎসা কতটুকু নিশ্চিত হবে? যতদূর জানা যায়, এসব অনিয়মের পেছনে সিন্ডিকেট কাজ করে। সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ইডিসিএল প্রয়োজনীয় মুহূর্তে উৎপাদন বন্ধ রাখে আর ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সরকারি হাসপাতালে বেশি দামে ওষুধ সরবরাহের সুযোগ পায়।

আবার অনেক হাসপাতাল সরকারের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও ইডিসিএলের উৎপাদিত চিকিৎসাসামগ্রীর মূল্য কম হওয়া সত্ত্বেও সেগুলো না কিনে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ মূল্যে এসব পণ্য কেনে।

আমরা মনে করি, দীর্ঘদিনে স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির যে মহা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, তা এত সহজে দূর করা যাবে না। এর জন্য ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান প্রয়োজন।

নিরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দুর্নীতিবিরোধী অন্যান্য সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে দুদককে ব্যাপক অভিযান চালাতে হবে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি ঘটনা বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/0ibr
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন