English

29 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করুন

- Advertisements -

বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকার অবস্থান বরাবরই খুব খারাপ। এক কোটি ৪০ লাখের বেশি জনসংখ্যা আছে, এমন মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান গত মাসেও ছিল দ্বিতীয়। দেশের অন্য শহরগুলোর অবস্থাও কমবেশি একই রকম। ভালো নয় গ্রামাঞ্চলের অবস্থাও। শুধু বায়ুদূষণের কারণে পৃথিবীতে বছরে ৭০ লাখের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু হয়, যার বেশির ভাগ মৃত্যুই ঘটে এশিয়া ও আফ্রিকায়।

বাংলাদেশেও বায়ুদূষণের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বায়ুদূষণ কমানোর উদ্যোগ নিতে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নিয়মিত দাবি জানানো হচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকেও বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু বায়ুদূষণ না কমে দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ঢাকা ও এর আশপাশের শহরগুলোতে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ অপরিকল্পিত ইটভাটা। অনেকটির না আছে অনুমোদন, না আছে পরিবেশ ছাড়পত্র। এগুলোতে প্রায় কোনো নিয়ম-কানুনই মানা হয় না। ব্যবহার করা হয় নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি। পোড়ানো হয় কাঠ। জনবসতি থেকে যে দূরত্বে ইটভাটা করার কথা, তা-ও মানা হয় না।

নির্মাণশৈলীও আধুনিক নয়। ফলে এগুলোর দূষণের মাত্রাও থাকে অনেক বেশি। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, ঢাকার ধামরাইয়ে মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে বায়ুদূষণকারী ১০টি অবৈধ ইটভাটাকে মোট ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, কিন্তু এতে কি ভাটাগুলোর দূষণের মাত্রা কমে যাবে? বছরে কিছু টাকা জরিমানা দিতে হবে, এটা ধরে নিয়েই অবৈধ ইটভাটাগুলো পরিচালিত হয়। অভিযোগ আছে, কখনো কখনো লোক-দেখানো অভিযান চালালেও প্রকৃতপক্ষে প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতা নিয়েই এসব ইটভাটা পরিচালিত হয়। তাহলে বায়ুদূষণের কারণে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু রোধ করার উপায় কী?

অতিরিক্ত বায়ুদূষণ আমাদের ফুসফুস অকেজো করে দেয়। এ ছাড়া বায়ুতে থাকা ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি অনুযায়ী অন্যান্য রোগও দেখা দেয়। কয়েক বছর আগে ঢাকার ১১টি এলাকায় ঢাকা শিশু হাসপাতাল যে গবেষণা চালায় তাতে দেখা যায়, ফুসফুসের অসুস্থতা ক্রমেই ব্যাপক হচ্ছে। ফুসফুসের সক্রিয়তা বা পিএফটি (পালমোনারি ফাংশন টেস্ট) পরীক্ষায় দেখা যায়, ঢাকার ২৩.৪৭ শতাংশ মানুষ ফুসফুসের কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত।

আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। এত দিনে এই হার নিশ্চয়ই আরো বেড়েছে। ইটভাটা ছাড়াও ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য দায়ী অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ, খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন, পুরনো ও অতিরিক্ত বোঝাই করা যানবাহন, কলকারখানা ইত্যাদি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঢাকাসহ বড় শহরগুলোর মানুষের জীবন বাঁচতে দ্রুত দূষণ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ইটের বহু বিকল্পের পাশাপাশি ইট পোড়ানোরও অনেক উন্নত পদ্ধতি এসেছে। সেগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। অবৈধ ও অধিক দূষণকারী ইটভাটা অবিলম্বে বন্ধ করুন।

Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন