English

24 C
Dhaka
বুধবার, মে ৮, ২০২৪
- Advertisement -

দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন: বিপজ্জনক বায়ুদূষণ

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

নিঃশ্বাস না নিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে না। আর নিঃশ্বাসের জন্য প্রয়োজন নির্মল বায়ু। সেই নির্মল বায়ুর অভাব ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। আর তাই মানুষ বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগসহ ক্যান্সার, হৃদরোগ, লিভার-কিডনির নানা রোগে।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষ রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়, তার প্রায় এক-চতুর্থাংশেরও বেশি মারা যায় বায়ুদূষণজনিত কারণে। অথচ বায়ুদূষণ রোধে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিষ্ক্রিয়তাও অত্যন্ত পীড়াদায়ক। ফলে ক্রমেই বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণের মাত্রা, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি হয় গাজীপুরে। তার পরেই রয়েছে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ। এই তিনটি শহরের বায়ুমান পাওয়া গেছে গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। আর সবচেয়ে কম দূষণ পাওয়া গেছে মাদারীপুর, পটুয়াখালী ও মেহেরপুরে—এসব জায়গায় এখনো অপরিকল্পিত উন্নয়নের অত্যাচার ব্যাপক হয়নি।
সাম্প্রতিক এই গবেষণাটি পরিচালনা করে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। গবেষণায় বায়ুদূষণের প্রধান যে কারণগুলো উঠে আসে, তার মধ্যে আছে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি ও সংস্কারকাজ, মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নকালে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ না নেওয়া, আশপাশের ইটখোলা, ছোট-বড় শিল্প-কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো। সেই সঙ্গে রয়েছে গাছপালা ও জলাধার কমে যাওয়া, খোলামেলাভাবে নির্মাণসামগ্রী পরিবহন, নির্মাণকাজ পরিচালনা ইত্যাদি। গবেষণা প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু আইন, ২০১৯-এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নসহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে সর্বাধিক দূষিত শহরগুলোতে শুষ্ক মৌসুমে দিনে কয়েকবার রাস্তায় পানি ছিটানো, নির্মাণকাজের স্থান ঘেরাও করে রাখা এবং মাটি-বালুসহ নির্মাণসামগ্রী ঢেকে পরিবহন করা, রাস্তার ধুলা কমানোর জন্য সাকশন ট্রাকের ব্যবহার করা ইত্যাদি। এ ছাড়া অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বিকল্প ইটের প্রচলন করতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা, প্রচুর গাছ লাগানো এবং ছাদ বাগানকে উৎসাহিত করা, জলাধার সংরক্ষণ, আগুনে পোড়ানো ইটের বিকল্প হিসেবে স্যান্ড ব্লকের ব্যবহার বাড়ানো এবং সিটি গভর্ন্যান্স প্রচলনের মাধ্যমে উন্নয়নমূলক কার্যকলাপের সমন্বয় সাধন করাসহ আরো কিছু সুপারিশ করা হয়।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন হোক, আর ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন হোক, সবই করা হয় মানুষের কল্যাণে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে, কিন্তু জনস্বাস্থ্যে রীতিমতো বিপর্যয় ডেকে আনে, এমন উন্নয়ন কোনোভাবেই কাম্য নয়। গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বায়ুদূষণের এই চিত্র নতুন নয়। এর বড় কারণ মনে করা হয় অবৈধ ইটভাটা এবং প্রচুর পরিমাণে দূষণকারী কলকারখানাকে। বছরের পর বছর এ নিয়ে আলোচনা হলেও অবস্থার বদল হচ্ছে না। তাহলে পরিবেশ অধিদপ্তর বা স্থানীয় প্রশাসন কী করছে? আমরা চাই, বায়ুদূষণ রোধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন