English

26 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০২৫
- Advertisement -

নদীগুলো বাঁচান: অবৈধ বালু উত্তোলন

- Advertisements -

নদীর দখল, দূষণ ও ভরাট যেমন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, তেমনি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না নদী থেকে অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলন। নদীর কোনো এক জায়গা থেকে এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সে জায়গাটিতে অতিরিক্ত গর্তের সৃষ্টি হয়। বর্ষায় পানি প্রবাহের সময় সেখানে ঘূর্ণাবতের সৃষ্টি হয় এবং আশপাশে নদীর পারে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। এভাবে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিবছর শত শত হেক্টর ফসলি জমি, বাড়িঘর, নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তা সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের এই অপতৎপরতা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। এমন দুটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে দুধকুমার নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির জমজমাট ব্যবসার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিদিন শত শত গাড়ি এসব বালু পরিবহন করছে। এর ফলে শতবর্ষী সোনাহাট রেল সেতুটিও হুমকির মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে নদীপারের শত শত মানুষ। অপর প্রতিবেদনে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে খোয়াই নদের একই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। নদীর দুই পারে গড়ে উঠেছে মাটি বিক্রির হাট। শত শত ট্রাক্টরে এই মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। এলাকার শক্তিশালী কিছু সিন্ডিকেটের এই ব্যবসা চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। এর ফলে নদীর তীরে থাকা প্রতিরক্ষা বাঁধটিও হুমকিতে রয়েছে।
প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার দুধকুমার নদ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এই প্রভাবশালীরা প্রশাসনকে খুব কমই পাত্তা দেয়। প্রতিদিন শতাধিক ট্রলি, তিন চাকার গাড়ি, ট্রাক ও ট্রাক্টর বালু পরিবহন করছে। গাড়িপ্রতি ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে প্রভাবশালী চক্রটি। অন্যদিকে চুনারুঘাটের খোয়াই নদের কিছু অংশ বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও ইজারাদাররা ইজারার শর্ত না মেনে মাটি কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চুনারুঘাটের ইউএনএ জানান, মাটি কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আর ইজারাবহির্ভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ বালু উত্তোলনের এই চিত্র সারা দেশে প্রায় একই রকম। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বরাবরই অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের বিরোধিতা করে আসছেন। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলনের বিরোধিতা করে মিটিং-মিছিলও করেছেন। কখনো কখনো বালু উত্তোলনকারীদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।
সারা দেশে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কোন নদীর কোথায় কতটুকু বালু উত্তোলন করা যাবে, তা আগে নির্ণয় করে বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দিতে হবে। ইজারার শর্ত সঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা নিয়মিত তদারকি করতে হবে। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে ভাঙন হলে সেই ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে সারা দেশে সরকারের পরিকল্পিত নদী খননকাজ এগিয়ে নিতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/a1lc
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন