English

31.9 C
Dhaka
শুক্রবার, জুলাই ৪, ২০২৫
- Advertisement -

কবে সচেতন হব আমরা: পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের গুদাম

- Advertisements -

পুরান ঢাকা থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি আর গেল না। ২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীতে ভয়াবহ আগুনে মারা যায় ১২৫ জন। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টার ওয়াহিদ ম্যানশনে রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণে লাগা আগুনে পুড়ে মারা যায় ৭১ জন। ওই বিস্ফোরণের কারণ ছিল রাসায়নিক দ্রব্য।

একইভাবে নিমতলীর আগুনের কারণও ছিল রাসায়নিক দ্রব্য।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে খুব বেশি সময় লাগেনি সেদিন। ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনা থেকে যথেষ্ট শিক্ষা নেওয়ার ছিল। ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি এলাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা বিপজ্জনক। নিমতলীর ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনার পর তালিকা করে ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা পুরান ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। চুড়িহাট্টার ঘটনার পরে গাজীপুরের টঙ্গী ও রাজধানীর শ্যামপুরে অস্থায়ীভাবে রাসায়নিকের ব্যবসা সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ মাঝপথে থমকে যায়। সরেনি রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা। অবৈধ কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা তাঁদের ব্যবসা বাড়িয়েই চলেছেন। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় প্রভাবের সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। সামান্য স্বার্থের কাছে পরাজিত হয়েছে মানুষের জীবন। ‘জীবনের চেয়ে বাণিজ্য বড়’।
একটি পরিবেশ সংগঠনের হিসাব বলছে, পুরান ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন বা রাসায়নিক দাহ্য বস্তুর গুদাম। এসবের মধ্যে ১৫ হাজার আছে বাসাবাড়িতেই। মাত্র আড়াই হাজার গুদামকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে সিটি করপোরেশন। বাকি ২২ হাজারের বেশি গুদামই অবৈধ। আড়াই শতাধিক ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিকের ব্যবসা রয়েছে এলাকায়।

২০১০ সালে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৫ জনের প্রাণহানির পর দুর্ঘটনা রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি রাসায়নিক কারখানা অপসারণসহ ১৭ দফা নির্দেশনা দেয়। উচ্চ পর্যায়ের সেই কমিটির দেওয়া সুপারিশমালা বাস্তবায়ন না করায় পরে রুলও জারি করেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত শেষে অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকিতে থাকা পুরান ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে আবার ২৫টি সুপারিশ করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের গঠিত কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিও পাঁচটি স্বল্পমেয়াদি ও ২৬টি দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ করে।

তদন্ত কমিটিগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে হয়তো অনেক সমস্যার সমাধান হতো। পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার পরিবর্তন ঘটত। কিন্তু সব সুপারিশ শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি নিয়েই বসবাস করতে হচ্ছে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের।

প্রশ্ন হচ্ছে, আর কবে সচেতন হব? আর কত প্রাণ গেলে আমাদের চৈতন্যোদয় ঘটবে। অবিলম্বে পুরান ঢাকার সব রাসায়নিকের কারখানা ও গুদাম স্থানান্তর করা হোক।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/duh1
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন