English

39 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
- Advertisement -

প্রাণীর আবাসযোগ্যতা বাড়ান: সংরক্ষিত বনাঞ্চল

- Advertisements -

বাংলাদেশে বন্য প্রাণীর অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই। সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। প্রাণীর আবাসযোগ্যতা নেই বললেই চলে।

সুন্দরবনে এখন পর্যন্ত প্রাণীর আবাসযোগ্যতা কিছুটা ভালো। এর পরও চোরা শিকারিদের উৎপাতে সেখানে মারা পড়ছে বাঘ, হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। কক্সবাজারের বনগুলোতে বন্য প্রাণী নেই বললেই চলে। মারা পড়ছে একের পর এক হাতি। একসময়ের সমৃদ্ধ মধুপুর বনাঞ্চলকে এখন বন বলেই মনে হয় না।
বৃহত্তর সিলেটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অবস্থাও শোচনীয়। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গত এক বছরে অন্তত ১০০টি বন্য প্রাণী মারা গেছে। এর মধ্যে আছে পাঁচটি অজগর, ৩০টি বিষাক্ত সাপ, পাঁচটি চিত্রাহরিণ, দুটি বনবিড়াল, তিনটি বন্য শূকর, সাতটি বানরসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণী। বাংলাদেশে বন্য প্রাণী সংরক্ষণের এমন দুরবস্থা কেন?
বনাঞ্চলের প্রাণী লোকালয়ে গিয়ে টিকতে পারে না। নানাভাবে মারা যায়। আবার বনাঞ্চলে থাকার জন্য খাদ্যসহ উপযুক্ত পরিবেশের প্রয়োজন হয়। কয়েক দশক আগেও লাউয়াছড়া বনটি ছিল বন্য প্রাণীর অত্যন্ত সমৃদ্ধ আবাসস্থল। বাংলাদেশে মাত্র দু-একটি বনে উল্লুক দেখা যেত, তার মধ্যে লাউয়াছড়া অন্যতম। বিপুল সংখ্যায় ছিল বানর, হনুমান, বনমোরগ, বন্য শূকর, গন্ধগোকুল, বনবিড়াল, মেছোবিড়ালসহ অনেক বন্য প্রাণী। একসময় ভালুকেরও আনাগোনা ছিল। এখন অনেক প্রজাতির দেখাই মেলে না। কয়েক প্রজাতির বন্য প্রাণী দেখা গেলেও সেগুলো সংখ্যায় অনেক কম। লাউয়াছড়া বনের এমন দুরবস্থার জন্য বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বনের পরিবেশ ধ্বংস হওয়াকেই দায়ী করেন। বিশেষ করে গত ১০ বছরে বনের বহু মূল্যবান গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। প্রাণীগুলোর খাদ্যসংকট চরমে উঠেছে।
ফলে প্রাণীগুলো খাবারের জন্য বন থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে চলে যায় এবং মারা পড়ে। প্রতিদিন শত শত পর্যটক বনে প্রবেশ করে। তাদের হৈ-হুল্লোড় ও অবাধ বিচরণের কারণে প্রাণীগুলো ভীত হয়ে পড়ে। আবার বনের জমি দখল করে লেবুবাগান ও অন্যান্য চাষাবাদ, কাঠ বা লাকড়ি কাটাসহ নানা কারণে বনে স্থানীয় মানুষের বিচরণও অনেক বেড়েছে। বন্য প্রাণীর অবৈধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কিছু চোরা শিকারির বিচরণ থাকার কথাও শোনা যায়। অনেকেই মনে করেন, বন্য প্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণে বন বিভাগের উদাসীনতাই লাউয়াছড়ার এমন দুরবস্থার প্রধান কারণ।

আমাদের অস্তিত্বের প্রয়োজনেই পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমাদের আরো উদ্যোগী হতে হবে। আমরা মনে করি, সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোর পরিবেশ উন্নয়ন করতে হবে। প্রাণীগুলোর যাতে খাদ্যসংকট না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পর্যটক ও অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক কথায় বনগুলোতে প্রাণীর আবাসযোগ্যতার উন্নয়ন করতে হবে।

Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন