English

35 C
Dhaka
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪
- Advertisement -

দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান: সিলেটে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

সিলেট ও সুনামগঞ্জে লাখ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত। বাড়িঘরে পানি ওঠায় বহু বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। হাট-বাজারে পানি ওঠায় মানুষ প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতেও পারছে না। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা মানুষ।

কাজকর্ম ও আয় উপার্জন না থাকায় তাদের বেশির ভাগই পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারের ত্রাণ সাহায্য এতটাই কম যে মানুষ বুকসমান পানি ঠেলে গিয়ে কোনো ধরনের ত্রাণসামগ্রী না পেয়ে খালি হাতে ফিরে আসছে। অনেক জায়গায় ক্ষুধার্ত মানুষ সামান্য ত্রাণ ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেছে। ত্রাণ নিয়ে কাড়াকাড়ি থেকে ঝগড়া-বিবাদও হয়েছে নানা জায়গায়। পুলিশকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সিলেটে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তার পরও শনিবার সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরো কয়েক দিন সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় যথেষ্ট বৃষ্টি হলেও চলতি বন্যা মূলত উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণেই হয়েছে। ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে ব্যাপক বন্যা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আসামে। সেই পানি উজানের বিভিন্ন নদ-নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এটিই চিরাচরিত নিয়ম। উত্তরের এই পানি বাংলাদেশের নদ-নদী দিয়ে বরাবরই বঙ্গোপসাগরে ধাবিত হয়। সমস্যা হচ্ছে, বর্তমানে আমাদের বেশির ভাগ নদীই ভরাট হয়ে গেছে। তাই উজানের পানি নদী দিয়ে প্রবাহিত হতে না পেরে বন্যার আকারে সমতল ভাসিয়ে যাচ্ছে। এপ্রিলের শুরুতে হাওরাঞ্চলেও একইভাবে উজানের ঢলে বন্যার উপদ্রব হয়েছিল এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বর্ষাকাল এখনো আসেনি। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে, উজানে আবারও ভারি বৃষ্টিপাত হবে এবং ভাটিতে থাকা বাংলাদেশ বারবার প্লাবিত হতে থাকবে। শুধু সিলেট অঞ্চল নয়, গতকালের পত্রিকায় দেখা যায়, টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে। চরাঞ্চলের বীজতলাসহ বোরো, বাদাম, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত পানির নিচে। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙন তীব্র হয়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

জানা যায়, সিলেট জেলার ১১ উপজেলায় প্রায় আট লাখ মানুষ পানিবন্দি। জেলা প্রশাসনের মতে, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে এ পর্যন্ত পাঠানো ৩০৫ মেট্রিক টন চাল, ১৫ লাখ টাকা ও চার হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগণ্য। বিশুদ্ধ পানির অভাবও তীব্র হয়ে উঠেছে। বেশির ভাগ মানুষের পক্ষেই পানি ফুটিয়ে খাওয়ারও উপায় নেই। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রবল। আমরা মনে করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্যাদুর্গতদের বড় অংশের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো জরুরি। সরকারের পাশাপাশি এনজিও ও অন্যান্য সামাজিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। একই সঙ্গে দুর্গত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন