বাংলাদেশে ডিজিটাইজেশনের সুযোগ নিয়ে গড়ে ওঠা অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অনলাইন শপিং ব্যবসার নামে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সুষ্ঠু নজরদারি ও বিদ্যমান নীতিমালার যথাযথ বাস্তবায়ন না থাকায় শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে, সেই অর্থ বিদেশে পাচার করেছে তারা। অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে।
আবার নীতিমালা লঙ্ঘন করে অনেক প্রতিষ্ঠান এমএলএম ধরনের ব্যবসা করছে। এমন আরো অভিযোগে সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু তাতে তো শেষ রক্ষা হয়নি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনার হাতছানি দিয়ে হঠাৎ করেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ই-কমার্স। অথচ অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের গ্লানি থেকে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ ছিল। বর্তমানে দেশে আনুমানিক আড়াই হাজার ই-কমার্স সাইটের বাইরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা করছে অন্তত পৌনে দুই লাখ উদ্যোক্তা। অথচ হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অপকর্মে ঝুঁকিতে পড়েছে কয়েক লাখ নতুন উদ্যোক্তা। প্রলোভনের ফাঁদ পেতে ব্যবসা চালাতে গিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেশের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাতকে আস্থার সংকটে ফেলে দিয়েছে।
প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থার কালো তালিকাভুক্ত আরো ২৩টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। সম্প্রতি দেশের সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের সব লেনদেনের তথ্য পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উচ্চ ছাড়ের প্রলোভন দেখিয়ে পণ্য বিক্রি, গ্রাহকের অর্ডার নিয়েও পণ্য সরবরাহ না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। চিঠিতে প্রতিষ্ঠানগুলোর লেনদেনের পাশাপাশি এদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকাও দিয়েছে বিএফআইইউ। এসব ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবের তথ্যও বিএফআইইউতে পাঠাতে বলা হয়েছে। এর আগে বিতর্কিত ইভ্যালিসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন গোয়েন্দারা। ওই ১০ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কালো তালিকায় এখন যোগ হলো এই ২৩ প্রতিষ্ঠান।
শুরুতে ই-কমার্সের জন্য কোনো নীতিমালাই ছিল না। সে কারণেই প্রতারণার সুযোগ পায় প্রতারকচক্র। এখন নীতিমালা হলেও এর যথাযথ বাস্তবায়ন বা মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে। আর সেই সুযোগ নিচ্ছে প্রতারণাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই এখনই লাগাম টেনে ধরতে হবে। সরকারের নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ আরো বাড়াতে হবে। নিতে হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/mm7s
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন