আর এই পাঁচ আঙুলের মতো ঘনিষ্ঠ ছিলেন তাঁর ভাতিজা, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন, ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মো. কামাল হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) জাহিদ হোসেন আর শ্যালক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত আলী।
তাঁরাই তাজুলের নির্দেশে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা দাপিয়ে বেড়াতেন। বিরোধীদের দমন-পীড়ন চালাতে তৈরি করা হয়েছিল আয়নাঘর। জমি দখল, কমিশন-বদলি-নিয়োগ-বরাদ্দ বাণিজ্য চলত পাঁচজনের নেতৃত্বে বিভিন্ন উপগ্রুপের মাধ্যমে।
মন্ত্রী থাকাকালে তাজুল কুমিল্লার ১৭ উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন সিটি করপোরেশন, ওয়াসা, পৌরসভা, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, পল্লী উন্নয়ন একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজের অর্থ নিতেন পাঁচজনের মাধ্যমে।ভুক্তভোগীরা জানান, তাজুলের ভাতিজা শাহাদাত ছিলেন মনোহরগঞ্জের অলিখিত প্রশাসক। উপজেলাজুড়ে জমি দখল, কথা না শুনলে বিরোধীদের অত্যাচার করার সিদ্ধান্ত তিনিই দিতেন। লাকসাম বাজারে থানার পাশে ছিল শ্যালক মহব্বত আলীর আয়নাঘর। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো।স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে কোন কারণে কোন প্রক্রিয়ায় এই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ লুটপাটতন্ত্রে রূপান্তরিত হলো তা নিয়ে অনুসন্ধান করা দরকার। দুর্নীতির বীজ আমাদের রক্তের মধ্যে মিশে গেছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে নখদন্তহীন বাঘ বনে যাওয়া দুদক বর্তমানে অনেকটাই কার্যকর হয়েছে।এখন পর্যন্ত বিগত সরকারের অন্তত ৬৯ মন্ত্রী-এমপির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁরা দুর্নীতিতে জড়িত তাঁদের আত্মশুদ্ধি দরকার। কঠোর করতে হবে আইনের প্রয়োগ। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে শুদ্ধাচার সহায়ক আমূল পরিবর্তন ছাড়া দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। দুর্বৃত্তায়ন থেকে রাজনীতি, রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও অবস্থানকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।