অনেকেই দাবি করেছেন, হিরুদের কালো ছায়া থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমআইএ) দাবি অনুযায়ী, কেবল বর্তমান চেয়ারম্যান কমিশনের দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা।
তাদের মতে, পুঁজিবাজারের ৯০ শতাংশ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এই বিপুল অঙ্কের অর্থ উধাও হওয়ার পেছনে কারসাজিকারীদের দৌরাত্ম্য যেমন রয়েছে, তেমনি আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দুর্বলতা ও প্রয়োজনীয় তদারকির অভাব।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনকালে দেশের শেয়ারবাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটে পরস্পরের সঙ্গী ছিলেন সালমান এফ রহমান, লোটাস কামাল, শিবলী রুবাইয়াত ও আবুল খায়ের হিরু।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তাঁদের কোনো ধরনের শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। এতে তাঁরা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। অথচ এই সিন্ডিকেটের কারসাজিতে নিঃস্ব হয়েছেন শেয়ারবাজারের লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। তাঁরা বাজার কারসাজিতে সহায়তা করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ পদগুলোতে নিজেদের পছন্দের লোক বসিয়েছেন। তাঁদের মাধ্যমে এখনো তাঁরা কারসাজি করে যাচ্ছেন।আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় ডিএসইএক্স সূচকের অবস্থান ছিল ৫৪২৬ পয়েন্টে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন আশায় বুক বাঁধেন বিনিয়োগকারীরা। সেই আশাবাদ থেকে গত বছরের ১১ আগস্ট সূচকটি বেড়ে ৬০১৬ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এর পর থেকেই শুরু হয় পুনরায় ছন্দঃপতন।সর্বশেষ গত রবিবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৯.৩৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪৭৯১ পয়েন্টে। লেনদেনও তলানিতে ঠেকেছে। রবিবার লেনদেন হয়েছে মাত্র ২৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকার। অর্থাৎ গত ৯ মাসে পুঁজিবাজারের সূচক কমেছে ১২২৫ পয়েন্ট। বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার কারণে যত দিন যাচ্ছে পুঁজিবাজারের দরপতন আরো তীব্র হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।আমরা মনে করি, দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যে পাঁচটি নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে। যেকোনো কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।