সামান্য বিষয়ের জের ধরে এক দল আরেক দলের সঙ্গে মারামারি থেকে শুরু করে খুনখারাবির মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে।
কিশোরদের এভাবে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠার কারণ কী? সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় যে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ তা অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে নানা অসংগতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। আবার কিশোরদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের অপরাধপ্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
মাদক বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ পর্যন্ত অনেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করেন। আবার যখন তারা দেখে যে অপরাধ যারা করছে তারা সমাজে বেশি লাভবান হচ্ছে, সেটা কিশোররা অনুসরণ করে। তাদের ওপর পারিবারিক ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বিশেষজ্ঞরা একই সঙ্গে এটাও বলছেন যে আগের অনুশাসনগুলো সমাজে কাজ করছে না।
সমাজের ভেতর পরিবার, প্রতিবেশী, এলাকাভিত্তিক সংস্কৃতিচর্চা, বন্ডিং—এগুলো নষ্ট হয়ে ছন্দঃপতন ঘটছে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা একেবারেই নেই। এসব কারণে কিশোর-তরুণরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
উঠতি বয়সের তরুণ হঠাৎ ক্ষমতা, টাকা-পয়সা, মাদক, অস্ত্র, অসৎ সঙ্গের সংস্পর্শে এসে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে যুক্ত হয়ে পড়ে; যেমন—চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি। বাড়িতে বসে ইন্টারনেটে আসক্ত হয়েও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকেন্দ্রিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী? মুক্তির উপায় কী? সমাজ বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যাবে, এখন এলাকাভিত্তিক সামাজিক কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না, খেলার মাঠ কমে এসেছে। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় কিশোররা সাইবারজগতে ঢুকছে।
অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে।