নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা সারা দেশেই বাড়ছে। কিছু কিছু এলাকায় এই বৃদ্ধির হার রীতিমতো উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। তেমনই একটি এলাকা হচ্ছে নোয়াখালী জেলা। প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, গত এক মাসে (সেপ্টেম্বর) নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে এসংক্রান্ত মামলা করা হয়েছে ৪২টি।
এর মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির মামলা রয়েছে ১৫টি। আগস্ট মাসে এই ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছিল ৩৬টি এবং জুলাই মাসে হয়েছিল ২৯টি।
বলা বাহুল্য, প্রতিপক্ষ প্রবল হলে অনেক ভুক্তভোগীই মামলা করেন না। ফলে শুধু মামলা থেকে এ ধরনের অপরাধমূলক ঘটনার প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না। সব খবর পত্রপত্রিকায় আসে না। লোকলজ্জার ভয়েও অনেকে ঘটনা চেপে যান। আবার স্থানীয়ভাবেও সালিসের নামেও অনেক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি এমন সব সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, যা সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করছে। এই নোয়াখালীতেই গত মাসে অদিতা নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, অদিতা রনি নামে এক গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশোনা করত।
সম্প্রতি তাকে বাদ দিয়ে অন্য এক শিক্ষকের কাছে পড়া শুরু করলে রনি ক্ষিপ্ত হন। অদিতার মা বাসায় না থাকার সুযোগে দুই সহযোগীকে নিয়ে রনি অদিতার বাসায় যান। তাঁরা অদিতাকে ধর্ষণের পর ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। ২০১৯ সালে পুলিশ নওগাঁ জেলার রানীনগরের এক সিরিয়াল কিলারকে গ্রেপ্তার করেছিল, যাঁর বিরুদ্ধে আট নারী ও এক বালিকাকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
এমন মানসিকতার খুনির সংখ্যা কি দেশে বেড়েই চলেছে?
অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, আমাদের সমাজ ক্রমেই অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগিয়ে চলেছে। এই অধোগতির লাগাম টানতেই হবে। সামাজিক সুরক্ষা ও নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বিবেচনায় নিতে হবে এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সেই কাজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি সচেতন মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। নারী নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার বিচার দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করতে হবে এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/d0vm